রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানের সময় নিরাপত্তায় গাফলতির অভিযোগ তুলেছে নিহত ফায়ার ম্যান আবদুল মতিনের পরিবার।
Published : 12 May 2017, 09:02 PM
মাছমারা বেনীপুর গ্রামে বৃহস্পতিবার সকালে শুরু হওয়া দেড়দিনের অপারেশন ‘সান ডেভিলে’ পাঁচজন নিহত হন, যারা সবাই জেএমবির সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য। আর বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসা জঙ্গিদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন এক ফায়ার সার্ভিসকর্মী মতিন।
মতিনের ভাগ্নে লুৎফর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নিরাপত্তার গাফলতির কারণে জঙ্গিদের হামলা ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মতিনের মৃত্যু হয়েছে, যা ওই ঘটনার ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়েছে।
“এমন বড় অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মেডিকেল টিমও রাখা হয়নি, যাতে আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পেলে মামা (মতিন) হয়ত মরতেন না।”
মতিনের স্ত্রী তানজিলা বেগম বলেন, “আমার স্বামী যখন সেখানে কাজ করছিল তখন তার পাশে পুলিশের লোক ছিল না। বেশ একটু দূরে অপ্রস্তুতভাবে দাঁড়িয়ে ছিল।”
টিভির খবর ও ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, জঙ্গিরা যখন বাড়ি থেকে বল্লম ও হাসুয়া হাতে নিয়ে বের হয় তখন পুলিশ গুলি করেনি। যখন তার স্বামীর উপর হামলা চালিয়ে বল্লম ও হাঁসুয়া দিয়ে কোপাতে থাকে তখনও পুলিশ গুলি চালিয়নি।
“পুলিশ এগিয়ে গিয়ে প্রথম থেকেই গুলি চালালে হয়ত আমার স্বামীকে মরতে হতো না।”
তিনি বলেন, ভিডিওতে স্পষ্ট কোপানোর দৃশ্য ও আর যারা লাশ দেখেছেন, তারা বলছেন ধারালো অস্ত্রের কোপে তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। তার স্বামীর বাম কানের অর্ধেক অংশ কেটে নিচের দিকে ঝুলে গেছে। অথচ তা অস্বীকার করে পুলিশ বলছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীকে কোপানোর ঘটনা ঘটেনি।
জঙ্গিদের ফাটানো বোমার স্প্রিন্টারের আঘাতে মতিন মারা যাওয়ার কথা সত্য নয় বলে দাবি করেন তার স্ত্রী তানজিলা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর দপ্তরের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিদের হামলায় ফায়ার ম্যান আব্দুল মতিন নিহত হওয়ার ঘটনায় সদর দপ্তর থেকে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটির প্রধান রয়েছেন তিনি নিজে।
ওই অভিযানের সময় নিরাপত্তায় কোনো গাফলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তদন্ত ছাড়া এখন সে ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না। নির্ধারিত ১৫ দিন সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
মতিনের বাড়ি গোদাগাড়ীর মাটিকাটা গ্রামের প্রয়াত এহসান আলীর ছেলে। বাড়িতে মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে গ্রামের বাড়িতে মতিনের দাফন সম্পন্ন হয়।