মেয়ের ‘উত্ত্যক্তকারীকে’ কোপালেন ‘মা’

মাগুরায় এক কলেজছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ তুলে মেয়েটির মা এক যুবককে কুপিয়েছেন বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। তবে মেয়েটির মা বলছেন, তিনি শুধু মারধর করেছেন।

মাগুরা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 May 2017, 01:49 PM
Updated : 6 May 2017, 02:44 PM

শনিবার মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

কৃষ্ণ অধিকারী  (২৪) নামের ওই যুবককে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

ওই ছাত্রীর মা অভিযোগ করেন, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আলফাপুর গ্রামের অসিত অধিকারীর ছেলে কৃষ্ণ অধিকারী দীর্ঘদিন ধরে মাগুরার শ্রীপুর কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল।

তিনি জানান, এ ঘটনার আগেও শ্রীপুর কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কৃষ্ণকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছিলেন। ওই সময় মান-সম্মানের ভয়ে মামলা না করায় একদিন হাজতবাসের পর সে ছাড়া পেয়ে যায়। কিন্তু তার মেয়ের পিছু ছাড়েনি।

শনিবার মেয়ের পরীক্ষা ছিল। তাই তিনি মেয়েকে নিয়ে দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে যাচ্ছিলেন। ওই সময় কৃষ্ণ মোটরসাইকেল নিয়ে তাদের পিছু নেয় বলে অভিযোগ মায়ের।

তিনি বলেন, কলেজ গেটে পৌঁছালে কথা আছে বলে কৃষ্ন তার মেয়ের হাত ধরে টান দেয়। এ সময় ২টা বেজে যাওয়ায় মেয়েকে দ্রুত পরীক্ষার রুমে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এসে দেখতে পান কলেজের সামনে চায়ের দোকানে কৃষ্ণ বসে আছে। ওই সময় তিনি তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন।

একই সময় মেয়েদের সঙ্গে বখাটেপানা করার অভিযোগে উপস্থিত লোকজনও তাকে মারপিট করেন বলে তিনি বলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ গেটের এক চা দোকানী ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমজান আলী নামে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, একজন নারী ৪-৫ জন ছেলেকে ডেকে এনে এক যুবকককে কলেজের ভেতরে ধরে নিয়ে যান। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তিনি তাকে কুপিয়ে জখম করেন। এক পর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবক সেখান থেকে পালিয়ে যান।

মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কৃষ্ণ বলেন, ওই মেয়ের সঙ্গে তার আগে একবার ঝামেলা হয়েছিল। শ্রীপুর থানায় সালিশ করে তিনি তা মিটিয়ে ফেলেন। তবে সে সময় এ ঘটনায় একরাত হাজতবাস করেছিলেন।

তবে আজকের বিষয়ে তিনি কিছুই জানে না দাবি করে বলেন, ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার আলফাপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তিনি মাগুরায় এসেছিলেন মোটরসাইকেল সার্ভিসিং করাতে। কলেজের সামনে চা খেতে বসেছিলেন।

“হঠাৎ ওই মহিলা এসে কয়েকজন যুবককে সঙ্গে নিয়ে আমাকে ধরে নিয়ে যান। পরে  তাদের সহযোগিতায় তিনি চাপাতি দিয়ে আমাকে কুপিয়ে জখম করেন। এরপর দৌড়ে পালিয়ে মাগুরা হাসপাতালে এসেছি।”

শ্রীপুর থানার ওসি বলেন, দুই-তিন মাস আগে এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার দায়ে শৈলকুপার আলফাপুর গ্রামের কৃষ্ণ নামে এক বখাটেকে জনগণ থানায় সোপর্দ করেছিল। কিন্তু ওই মেয়ে বা তার অভিভবকরা মামলা না করায় সে সময় ওই বখাটের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।  

সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশী নজরদারিতে মাগুরা হাসপাতালে ওই যুবকের চিকিৎসা চলছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। উত্ত্যক্ততের শিকার ছাত্রী বা তার মা মামলা করলে তাকে আটক করে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।