আলামত গোপনের অভিযোগ রাউধার বাবার

মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফের মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আলামত গোপনের অভিযোগ করেছেন তার বাবা।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 02:05 PM
Updated : 19 April 2017, 02:05 PM

বুধবার বিকালে রাজশাহী সিআইডির কার্যালয়ে লিখিত সাক্ষ্যে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ এ অভিযোগ করেন বলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক জানান।

তিনি বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রাউধার বাবা মামলার বাদী আথিফের লিখিত সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, যাতে রাউধা খুন হওয়ার সন্দেহের বিষয় উল্লেখ করেছেন তিনি।

“তাছাড়া সাক্ষ্যে তিনি মারা যাওয়ার এক সপ্তহ আগে সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদ ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে রাউধাকে জুস খেতে দিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে ও পরের দিনের সিসিটিভির ফুটেজ কলেজ কর্তৃপক্ষ দেখালেও ওই রাতের ফুটেজ গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।”

রাউধার লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল এবং দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে লাশ নামানো হয়েছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানালেও এর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি বলে আথিফ তার সাক্ষ্যে জানিয়েছেন বলে সিআইডির এ কর্মকর্তা জানান।

সাক্ষ্যের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, রাউধাকে ঝুলতে দেখে সিরাত পারভীন একাই তার রুমে প্রবেশ করে লাশ নামিয়েছেন। এর পর পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

“মৃত্যুর আগে রাত ১১টার দিকে সিরাত পারভীনকে নিয়ে রাউধা ওই হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিল, কিন্তু কলেজ বলছে রাউধা একাই চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিল।”

এছাড়াও গলায় যে দাগ রয়েছে সেটি আত্মহত্যার নয় বলে দাবি করেছেন রাউধার চিকিৎসক বাবা আথিফ।

গত ২৯ মার্চ হোস্টেলের ওই কক্ষ থেকে রাউধার লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড় বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী।

এ ঘটনায় ওইদিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে।

এরপর ৩০ মার্চ তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ১ এপ্রিল রাজশাহীর হেতেমখাঁ গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

ওইদিন রাউধা আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে রাউধার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করেন।

গত ১০ এপ্রিল রাউধার চিকিৎসক বাবা মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়- রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মিরে।

গত ১৩ এপ্রিল রাউধার বাবার দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি হস্তান্তরের পর ১৫ এপ্রিল থেকে সিআইডি পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করে।

তার বাবার আবেদনে লাশ কবর থেকে তুলে আবার ময়নাতদন্তের আদেশ দিয়েছে আদালত।