রাউধার কাশ্মিরি সহপাঠীর পাসপোর্ট জব্দ

রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজে পড়তে আসা মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফ হত্যা মামলার আসামি তার কাশ্মিরি সহপাঠীর পাসপোর্ট জব্দ করেছে সিআইডি।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2017, 11:39 AM
Updated : 19 April 2017, 11:52 AM

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বুধবার জানান, গত ১৫ এপ্রিল মামলার একমাত্র আসামি তার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে তাকে কলেজ না ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে আদালত মালদ্বীপের এ মডেল কন্যার লাশ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিলেও লাশ কবে উত্তোলন করে ফের তদন্ত করা হবে তা ঠিক হয়নি বলে জানিয়েছেন এ সিআইডি কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, রাউধার লাশের দ্বিতীয় দফায় কারা ময়নাতদন্ত করবেন সে ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। ময়নাতদন্তের বোর্ড গঠনের পরই লাশ কবর থেকে তোলা হবে।

প্রথম ময়নাতদন্তে আত্মহত্যার কথা বলায় আদালতে দ্বিতীয় দফা ময়ন্তাতদন্তের আবেদন করেন রাউধার বাবা মোহাম্মদ আথিফ।

আবেদনের উপর শুনানি শেষে মঙ্গলবার রাজশাহীর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত-১ এর বিচারক মাহাবুর রহমান কবর থেকে লাশ তুলে ফের ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।

আসমাউল হক বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মুনসুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত হয়। এই বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, ফরেন্সিক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এমদাদুল হক এবং ওই বিভাগের বর্তমান সহযোগী অধ্যাপক এনামুল হক।

এদের মধ্যে মুনসুর রহমান খণ্ডকালীন এবং এমদাদুল হক রাজশাহী ইসলামি ব্যাংক মেডিকেল কলেজের নিয়মিত শিক্ষক বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, তাছাড়া গত ৩১ মার্চ রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করার পরের দিনই তারা প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন; যাতে উল্লেখ করা হয়েছে রাউধা গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

“এসব কারণে রাউধার চিকিৎসক বাবা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি তোলেন।”

ময়নাতদন্তের বোর্ডের সদস্য এমদাদুল হক বলেন, “রাউধা আথিফ ও সিরাত পারভীন মাহমুদ দুইজনেই আমাদের শিক্ষার্থী। তারা দুইজনেই বিদেশি। এখানে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাল্টে দেয়ায় আমাদের কোনো স্বার্থ নেই।

“আমরা যেটা পেয়েছি সেটায় প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছি।”

গত ২৯ মার্চ হোস্টেলের ওই কক্ষ থেকে রাউধার লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ জানিয়েছিল, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে কাপড় বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী।

এ ঘটনায় ওইদিনই কলেজ কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে নগরীর শাহ মখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে।

এরপর ৩০ মার্চ তিন সদস্যের বোর্ড গঠন করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে ১ এপ্রিল রাজশাহীর হেতেমখাঁ গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

ওইদিন রাউধা আত্মহত্যা করেছে বলে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর মালদ্বীপের দুই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীতে এসে রাউধার মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করেন।

গত ১০ এপ্রিল রাউধার চিকিৎসক বাবা মোহাম্মদ আতিফ রাজশাহীর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে বলা হয়- রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২০) একমাত্র আসামি করা হয়। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মিরে।

গত ১৩ এপ্রিল রাউধার বাবার দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। মামলাটি হস্তান্তরের পর ১৫ এপ্রিল থেকে সিআইডি পুলিশ মামলাটি তদন্ত শুরু করে।