প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর শীর্ষ হুজি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানের সহযোগী মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের সঙ্গে দেখা করেছেন তার মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা।
Published : 11 Apr 2017, 05:37 PM
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার ছগির মিয়া জানান, মঙ্গলবার দুপুরের পরে কারাগারে এসে রিপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার বাবা আবু ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও নাজমুলের স্ত্রী ও দুই মেয়ে। তারা প্রায় ২৫ মিনিট রিপনের সঙ্গে ছিলেন।
ছগির মিয়া জানান, মঙ্গলবার সকালে রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করার পর সেই চিঠি কারাগারে পৌঁছেছে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারা কর্তৃপক্ষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠি হাতে পায়।
“ফাঁসি কবে ও কখন কার্যকর হবে এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চলছে। কারাগারে জল্লাদকে প্রস্তত রাখা হয়েছে।”
রিপনের বাবা আবু ইউসুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলে খুব ভালো। সে নির্দোষ। এলাকায়ও সে ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। সে জঙ্গিদের সঙ্গে মিশিছে কি না তা আমার জানা নেই।”
রিপনের ভাই নাজমুল ইসলাম বলেন, কারাগারে রিপন সুস্থ আছে। তাকে বিচলিত দেখায়নি। সে সবাইকে তার জন্য দোয়া করতে বলেছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ছগির বলেন, “চিঠি পাওয়ার পর আমরা আসামিকে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার খবর জানিয়েছি। দণ্ড কার্যকরে আমরা প্রস্তত আছি। উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত ও সব প্রক্রিয়া শেষ হলেই ফাঁসি কার্যকর করা হবে।”
এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি মুফতি আব্দুল হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের প্রাণভিক্ষার আবেদনও নাকচ হয়ে গেছে।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাদের চিঠি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছানোর পর মঙ্গলবার হান্নান ও বিপুলের পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে ডেকেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদনের সিদ্ধান্ত জানার আগেই গত রোববার রিপনের ১২ জন আত্মীয় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়ে দেখা করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল গত রোববার সাংবাদিকদের জানান, প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ায় তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা। কারাবিধি অনুযায়ীই আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা হবে।
এছাড়া পুলিশ কনস্টেবল রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া নামের আরেক ব্যক্তি মারা যান হাসপাতালে। আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অন্তত ৪০ জন ওই ঘটনায় আহত হন।
ওই ঘটনায় করা মামলার চূড়ান্ত রায়ে আপিল বিভাগ গত বছরের ৭ ডিসেম্বর তিন আসামির সর্বোচ্চ সাজার রায় বহাল রাখে।
এ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডিত দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাই কোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। আপিল না করায় তাদের ওই সাজাই বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। ফলে চূড়ান্ত বিচারেও ফাঁসির রায় বহাল থাকে।