এক মাস নজরে রেখে গ্রেপ্তার, পরদিন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত

বগুড়ার শেরপুরে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত জেএমবি নেতা আমিজুল ইসলাম ওরফে আলামিন ওরফে রনিকে এক মাস নজরদারিতে রেখে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রাজশাহী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2017, 02:27 PM
Updated : 2 March 2017, 03:48 PM

রাজশাহীর গোদাগাড়ি থেকে গ্রেপ্তারের পর বুধবার রাতে শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের জামনগর এলাকায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন আমিজুল।

আমিজুল গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার রাতেই বাড়িতে তালা দিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে গেছেন। পুলিশ তাদের সন্ধানে নেমেছে বলে জানান গোদাগাড়ি থানার ওসি হিপজুর আলম মুন্সি।

ওসি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পায়নি। আমিজুলের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশ তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে তার বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখছে বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।

গোদাগাড়ি পৌরসভার রাজারামপুর থেকে গ্রেপ্তারের সময় আমিজুল বগুড়া গোয়েন্দা পুলিশের দুই সদস্যকে ছুরিকাঘাত করেছেন। আহত কনস্টেবল আবদুস সালাম ও ইসমাইল হোসেন রাজশাহী মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আবদুস সালাম বলেন, আমিজুল জেএমবির উত্তরাঞ্চলের সামরিক প্রধান। গত এক মাস ধরে তারা আমিজুলের গতিবিধি নজরে রাখছিলেন।

“মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের এক এএসআইয়ের নেতৃত্বে চারজন আমিজুলের বাড়ির সামনে যান। এসময় বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন আমিজুল।

তিনি বলেন, আমিজুলকে প্রথমেই আটকান কনস্টেবল ইসমাইল। এ সময় তাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করেন তিনি। এরপর তিনি দৌড়ে গিয়ে তাকে জাপটে ধরলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন আমিজুল।

কনস্টেবল সালাম বলেন, গ্রেপ্তারের আগে রাজশাহী শহরে জেএমবির শীর্ষ পর্যায়ের এক নেতার সঙ্গে এক ঘণ্টা গোপন বৈঠক করেন আমিজুল। সেখান থেকে সন্ধ্যায় গোদাগাড়িীর বাড়িতে যান।

“তার পিছু নিয়ে আমরাও গোদাগাড়িতে পৌঁছে যাই।”

গোদাগাড়ি পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মামুন অর রশিদ বলেন, এলাকার আতাউর রহমানের তৃতীয় স্ত্রী লাইলী বেগমের আগের পক্ষের ছেলে আমিজুল। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চর হরিশপুর গ্রামে নানার বাড়িতেই বড় হয়েছেন।

“তবে পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর ধরে তিনি রাজারামপুরে মায়ের কাছে থাকতেন। তবে এলাকার অনেকের কাছেই অচেনা আমিজুল মসজিদে গিয়ে নামাজের পর দোয়ার বিরোধিতা করে এলাকায় সমালোচিত হন।”

এছাড়া তার কথাবার্তায় উগ্রতা থাকায় অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখত বলে জানান তিনি।

কাউন্সিলর মামুন বলেন, আমিজুলের বাবা আতাউর রহমান এক সময় জুয়া ও মাদক সেবন করলেও তার মধ্যেও পরিবর্তন আসে। মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত আযান দিয়ে মুয়াজ্জিন বনে যান আতাউর।

“তাদের বাড়িতে মাঝে মধ্যেই অচেনা নারী পুরুষ আসত। ইসলামী বৈঠকও হতো তার বাড়িতে।”