সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় পাথর উত্তোলনের সময় টিলা ধসে পাঁচ শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ।
Published : 08 Feb 2017, 06:58 PM
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত বুধবার পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামানের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) সুজ্ঞান চাকমা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও তদন্তে কী পাওয়া গেছে তা জানাতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে তিনি পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলতে পরামর্শ দেন। তবে পুলিশ সুপারের মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি তিনি।
এর আগে গত শুক্রবার জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের তদন্ত কমিটির এক সদস্য জানিয়েছেন, পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর তোলায় স্থানীয় প্রভাবশালীচক্র জড়িত বলে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। আর এতে স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি রয়েছে।
এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদনে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তদন্ত কমিটির ওই সদস্য।
তিনি আরও বলেন, এর আগে জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনেও শাহ আরপিন টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর তোলায় ৪৭ জন জড়িত বলে চিহ্নিত করা হয়। ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও কিছু গণমাধ্যমকর্মী ‘পরোক্ষভাবে’ জড়িত থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় তদন্ত কমিটি।
গত ২৩ জানুয়ারি শাহ আরেফিন টিলা ধসে পাঁচ শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পরপরই এডিএম শাহেদুলকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলা প্রশাসন। আর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করে পুলিশ।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, মাটিচাপা পড়ে শ্রমিক নিহত হওয়া ও লাশ সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে থানা-পুলিশের ভূমিকা রয়েছে। থানা-পুলিশের সঙ্গে পাথর ব্যবসায়ীদের সুসম্পর্কের কারণেই ভোলাগঞ্জ ও শাহ আরেফিন টিলায় ‘বোমা মেশিন’ দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও এবং কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না সে ব্যাপারে অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসনের তদন্ত দলের প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সাফায়াৎ মুহম্মদ শাহেদুল ইসলাম।