জাতিসংঘ মিশনে সেনাদলের সদস্য হিসেবে সেন্ট্রাল আফ্রিকায় কাজ করছিলেন সাতক্ষীরা সদরের ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের হাজিপুর গ্রামের রহিম। বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তের গুলিতে তিনি প্রাণ হারান।
তাদের বাড়িতে এখন চলছে বাবা, মা, স্ত্রী, ভাই, বোনের আহাজারি। তাদের সান্ত্বনা দিতে আসা প্রতিবেশী আর স্বজনরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন। রহিমের পাঁচ মাসের সন্তান বাবাকে চেনার আগেই হারিয়ে ফেলল।
কৃষক আব্দুল মাজেদ আর গৃহিনী রওশন আরার তিন সন্তানের মধ্যে সবার বড় ছিলেন রহিম। চার বছর আগে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রাজবাড়িয়া গ্রামের রুবাইয়া সুলতানা রানুকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের একমাত্র ছেলে ফারাবির জন্ম হয় গত বছরের অগাস্টে।
স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর হাজিপুর গ্রামে দরিদ্র এ পরিবারে জন্ম নেন রহিম। স্থানীয় ঝাউডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাইস্কুল থেকে লেখা পড়া শেষে কলারোয়া উপজেলার সরকারি মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু অভাবের সংসারে পড়াশোনা আর চালাতে পারেননি দরিদ্র বাবা আব্দুল মাজেদ।
সংসারের অভাব দূর করতে চলে আসেন সাতক্ষীরা শহরে। একদিন বাড়ি ফিরে মাকে জানান সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার খবর।
বিলাপ করতে করতে মা বলেন, বাড়ি গিয়ে মাকে দিলেন সেনাবাহিনীতে চাকরি হওয়ার খবর। সেদিন থেকেই দেশের জন্য কাজ করার আর পরিবারের অভাব দূর করার স্বপ্ন দেখতে থাকেন।
সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে রহিম প্রথমে কুমিল্লা সেনানিবাস পরে ঢাকায় যুক্ত হন। পরে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যোগ দেন। বৃহস্পতিবার আফ্রিকা থেকে তার মৃত্যুর খবর আসে।
প্রতিবেশী ও নিকট আত্মীয় ইব্রাহিম হোসেন মিঠু সাংবাদিকদের বলেন, রহিমের মতো দায়িত্বশীল ও একজন নির্ভীক ছেলেকে হারিয়ে পুরো গ্রাম শোকাহত।