রংপুরে নিঃসঙ্গ শাওন, যুবরাজ

অরণ্য থেকে মানুষের জগতে এসে বছরের পর বছর নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছে রংপুর চিড়িয়াখানার বাঘিনী শাওন, জলহস্তী যুবরাজসহ নয় প্রজাতির প্রাণী।

রংপুর প্রতিনিধিশাহজাদা মিয়া আজাদ, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Dec 2016, 09:42 AM
Updated : 31 Dec 2016, 09:59 AM

সরজমিনে দেখা গেছে, প্রাণীগুলো যেমন নিঃসঙ্গ জীবন কাটাচ্ছে তেমনি বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েছে।

চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর এস এম মোশাররফ হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ২০০৩ সালের ৩০ জুন ঢাকা চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয় বাঘিনী শাওন। ২০১০ সালের জানুয়ারি তাকে রংপুরে আনা হয় সুলতানের সঙ্গী হিসেবে।

“শাওনকে যখন আনা হয় তখন সুলতানের বয়স ১৭ বছর। সে সময় তার প্রজনন ক্ষমতা না থাকায় নিঃসন্তানই থাকতে হয় শাওনকে। আর এর তিন বছর পর ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সুলতানের মৃত্যুর পর থেকে সঙ্গীহীন জীবন কাটছে শাওনের। পুরুষ সঙ্গী থাকলে এত দিনে হয়ত আট-দশটি বাচ্চা দিত।”

একই অবস্থা অন্য অনেক প্রাণীরও।

মোশাররফ বলেন, ২০১২ সালের জানুয়ারিতে রোগাক্রান্ত হয়ে ছয়টি বাচ্চাসহ ময়ূরের মৃত্যুর পর থেকে একাকী দিন কাটছে ময়ূরীর। জলহস্তী যুবরাজকে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে আনা হয় ২০০৯ সালে। যুবরাজের বয়স এখন ২০ বছর। তারও কোনো সঙ্গী নেই। থাকার জন্য তার কোনো খাঁচাও নেই। তাই রাখা হয়েছে কুমিরের খাঁচায়।

“এছাড়া ১০-১২ বছর ধরে সঙ্গীহীন দিন কাটাচ্ছে দুটি নারী ভালুক, দুটি মাদী গাধা, একটি কোশোয়ারী ও একটি নারী বেবুন।”

এদের জন্য সঙ্গী চেয়ে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও ফল পাওয়া যায়নি বলে জানান ডেপুটি কিউরেটর মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ২২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত রংপুর চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ২৬ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। আছে ১০৫ রকমের পাখি ও ৯৮ প্রজাতির সরীসৃপসহ অন্যান্য প্রাণী।

এদের বেশির ভাগেরই গড় আয়ুর অর্ধেক পেরিয়ে এসেছে। চিতাবাঘ ও অজগরসহ কয়েকটি সাপের মৃত্যুর পর তাদের খাঁচাগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।

ডেপুটি কিউরেটর মোশাররফ জানান, চলতি বছর চিড়িয়াখানার গেট, ক্যান্টিন, লেক, শিশুপার্ক, বাগান ও গাড়ি পার্কিং সেন্টার ইজারা দিয়ে আয় হয়েছে ৫৭ লাখ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে সোয়া কোটি টাকার বেশি।

প্রাণীর সংখ্যা বাড়লে আয়ও বাড়বে বলে তিনি জানান।