গোপালগঞ্জের একটি ইউনিয়নে দুঃস্থদের ১০ টাকা কেজি দরের চাল ওজনে কম দেওয়ার পাশাপাশি বিত্তবানদের নামে কার্ড বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
Published : 10 Sep 2016, 07:35 PM
সদর উপজেলার হরিদাসপুর ইউনিয়ন থেকে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আমিনুর রহমান মোল্লা বলেন, খাগাইল গ্রামের ডিলার বদর মোল্লা শনিবার সকালে খাগাইল বাজারে চাল বিতরণ শুরু করেন। তিনি প্রতি কেজি চাল ১০ টাকা হিসেবে ৩০০ টাকায় জনপ্রতি ৩০ কেজির বদলে ২৮ কেজি করে চাল দিয়েছেন ট্যাগ অফিসারের সমনেই।
তিনি ১০০ জনকে ৩০০ টাকায় ২৮ কেজি করে চাল দিতে দেখেছেন বলে জানান।
এছাড়া দুঃস্থদের বঞ্চিত করে বিত্তবানদের এক নামে একাধিক কার্ড দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
খাগাইল গ্রামের দুলাল মোল্লা বলেন, “আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা রেখে ২৮ কেজি চাল দিয়েছে। আমার মতো আরও অনেককেই কম দেওয়া হয়েছে।”
৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আজিম শেখ অভিযোগ করেন, সাবেক ওয়ার্ড সদস্য আকলিমা বেগম, তার স্বামী আব্দুল গনি ও তার মা আনোয়ারা বেগমের নামে কার্ড দেওয়া হয়েছে। বিত্তবান কদর শেখ ও তার স্ত্রী মিনি বেগম কার্ড পেয়েছেন। অপেক্ষাকৃত সচ্ছল রোকেয়া বেগম এক নামে দুটি কার্ড পেয়েছেন। ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিল্ডিংয়ের মালিক ইউসুফ মোল্লা, আরজ আলী খান ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগমের নামে কার্ড দেওয়া হয়েছে।
২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মাসুদুল হাসান অভিযোগ করেন, “বিত্তবানদের কার্ড দেওয়ায় আমার ওয়ার্ডে প্রতিবন্ধী চেরাগ আলী, দুঃস্থ গৃহবধূদের মতো অসংখ্য মানুষ বঞ্চিত হয়েছে।”
হরিদাসপুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ও চাল বিতরণের ট্যাগ অফিসার দীনেশ জয়ধর বলেন, “চাল বিতরণের অভিজ্ঞতা আমার নেই। এটিই প্রথম। ডিলার বদর মোল্লা আমাকে জানান, গুদাম থেকে তাকে চাল কম দেওয়া হয়েছে। তাই ক্রেতাদের চাল ওজনে একটু কম দিতে হবে।”
ডিলার বদর মোল্লা বলছেন, “গোপালগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে আমাকে চাল ওজনে কম দেওয়া হয়েছে। এ কারণে প্রথম দিকে ওজনে কম দিয়েছি। পরে আমরা ওজন ঠিক করে দিয়েছি।”
বিত্তবানদের কার্ড দেওয়ার ব্যাপরে তিনি বলেন, “এটি ভুল হয়েছে। তাদের কার্ড বাতিল করে দুঃস্থদের দেওয়া হবে।”
গোপালগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়কৃষ্ণ গুপ্ত বলেন, “গুদাম থেকে চাল ওজনে কম দেওয়া হলে ডিলার বদর মোল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা খাদ্য কর্মকর্তা, ইউপি চেয়ারম্যান অথবা আমাকে জানাতে পারতেন। তিনি কাউকেই বিষয়টি জানাননি।”
সদর উপজেলা ইউএনও মো. জালাল উদ্দিন বলেন, প্রাথমিকভাবে ওজনে কম দেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুঃস্থদের বদলে বিত্তবানদের কার্ড দেওয়ার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।