পরিবারের কাছে ফিরতে অধীর হয়ে থাকা বছর দশেকের ছেলেটি কবে দেশে যাবে তা বারবার জানতে চাইছে বলে ওই কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন জানিয়েছেন।
সনুর কথায়ও এর প্রমাণ পাওয়া যায়।
“আমি আমার মা-বাবার সাথে কথা বলেছি। এখন বাড়ি যেতে চাই,” বলেছে সে।
রহিমা নামে এক নারী নয়া দিল্লি থেকে তাকে চুরি করে বরগুনায় এনেছিলেন বলে জানান সনু।
“আমাকে দিয়ে কাজ করাত, মারধর করত।”
শাহাবুদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানান, গত বছর ২২ ডিসেম্বর বরগুনার একটি আদালত সনুকে তাদের কেন্দ্রে পাঠায়।
আদালতের নথির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, বরগুনার গোরামর্দন গ্রামের সিরাজুলের স্ত্রী রহিমা ও জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আকলিমা ২০১০ সালে ভারতের নয়া দিল্লি থেকে ছেলেটিকে নিয়ে আসেন।
“রহিমা প্রতিবেশীদের কাছে তাকে বোনের ছেলে বলে পরিচয় করিয়ে দেন। একটু বড় হলে সনুকে দিয়ে তারা বাড়ির কাজ করাতেন। এতে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। তখন জামালউদ্দিন নামে এক প্রতিবেশী সনুর ব্যাপারে খোঁজ নিতে শুরু করেন।”
এরপর জামালউদ্দিন যশোরের মানবপাচারবিরোধী সংগঠন রাইটসের নির্বাহী পরিচালক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
বিনয়কৃষ্ণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রহিমার পবিরারের নির্যাতনে সনু পালিয়ে গিয়ে জামাল উদ্দিনের কাছে আশ্রয় নেয়। এ সময় সে তাকে চুরি করে আনার কথা জানায়।
জামাল এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করলে রহিমার পরিবার ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তারা জামালের বিরুদ্ধে বেতাগী থানায় মিথ্যা একটি পাচার মামলা দায়ের করে।
এ পরিস্থিতিতে জামাল ঢাকায় মানবাধিকার কমিশনে যোগাযোগ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেখান থেকে ভারতীয় হাই কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে সনুর পরিবারের খোঁজ নেওয়া হয়।
বাংলাদেশে ভারতীয় হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি রমাকান্ত গুপ্ত বুধবার দুপুরে যশোর কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে সনুর সাথে কথা বলেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তার পরিবারের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি।”