জিকা ঠেকাতে বেনাপোলে সতর্কতা

লাতিন আমেরিকায় আতঙ্ক হয়ে দেখা দেওয়া জিকা ভাইরাস বহনকারী কেউ যাতে স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর এড়িয়ে দেশে ঢুকতে না পারে সেজন্য বেনাপোল বন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Feb 2016, 02:39 PM
Updated : 6 Feb 2016, 02:39 PM

সতর্কতার অংশ হিসেবে ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ইমিগ্রেশনে আসার পরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বিদেশিদের মেডিকেল টিমের কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি তরিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।

বেনাপোল চেকপোস্টে কর্মরত মেডিকেল টিমের সদস্য জ্যোতিষ চন্দ্র রায় জানান, ইবোলা ভাইরাস ও সোয়াইন ফ্লু প্রতিরোধে গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে একটি মেডিকেল টিম বেনাপোলে রয়েছে। তারাই এখন জিকা ভাইরাস সনাক্তে কাজ করছেন।

বৃহস্পতিবার জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনো সম্ভাব্য কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তবে সতর্ক আছি।

“সবার স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশনা আসেনি। যাদের দেহে ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যাবে তাদের পরীক্ষা করা হচ্ছে।”

চলতি মাসের প্রথম পাঁচ দিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বিভিন্ন দেশের এক হাজার ৩৭৮ জন নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন বলে ওসি তরিকুল জানান্।

এদের মধ্যে ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, বেলারুশ,  শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক আছেন।

লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে জিকা ভাইরাসের কারণে হাজারো শিশুর ত্রুটি নিয়ে জন্ম হয়েছে। এই ভাইরাস ঠেকাতে নজরদারি জোরদারের পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ব্রাজিলে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়েছে। গত এক বছরে তিন থেকে চার কোটি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।

কয়েকদিন আগে স্পেনের এক নারীর দেহে জিকা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে, যিনি সম্প্রতি লাতিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়া সফর করেছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায়ও জিকা ভাইরাস আক্রান্তের খবর এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে।

ডেঙ্গুর পোষক এডিস এজিপ্টি জিকা ভাইরাস ছড়ানোয় এ নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকে এই ভাইরাস ঠেকাতে বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়।

শনিবার বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভবনে অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়,  ভারত থেকে আসা বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের তালিকা স্বাস্থ্য কর্মীদের জানিয়ে দিচ্ছে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

স্বাস্থ্য কর্মীরা তালিকা ধরে  থার্মাল স্ক্যানিং মেশিনে যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন। কোনো গড়মিল পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে জেলা সিভিল সার্জন অফিসে জানানো হচ্ছে।