রোমাঞ্চের নেশায় ব্রুনেইয়ের ক্যানোপি-ফরেস্টে

প্রকৃতি-দর্শনে হাইকিং সবসময়ই আমার প্রথম পছন্দ। যখনই সময়-সুযোগ পেয়েছি, হাতছাড়া করিনি। একজন ভূতাত্ত্বিক হিসেবে প্রকৃতি এবং পরিবেশ সবসময়ই আমাকে টেনেছে।

একেএম এহসানুল হক, ব্রুনেই থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2017, 12:48 PM
Updated : 12 Jan 2017, 12:48 PM

আমার হাইকিং অভিজ্ঞতার হাতেখড়ি রাঙ্গামাটির বেলাইছড়ি থেকে। সালটা ছিল ২০০৬। সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমিকম্প-বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রকল্পে জুনিয়র গবেষক হিসেবে কাজ করতাম।

কাজের সুবাদে মাসখানেক পর পর সিলেটে এবং পার্বত্য চট্রগ্রামে যেতে হত। রোমাঞ্চের শুরু আসলে সেখান থেকেই, যেটা আর কখনই থেমে থাকেনি। যদিও সময়ের পথচলায় সেটা কম-বেশি হয়েছে।

২০১৫ সালে ডক্টরাল গবেষণার সুবাদে ব্রুনেইতে আসার পর মনে হয়েছিল, ঠিক এমন কোন জায়গাই আমি খুঁজেছি মনে মনে! প্রিস্টিন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জঙ্গল, অদ্ভুত সবুজ পাহাড় এবং স্বচ্ছ-জলের পাহাড়ি নদী- এ সবকিছুই একসাথে পেয়েছি ছোট্ট এই দেশে। সেই সাথে পাঁচ লাখ লোকের এ দেশে মানুষের অকৃত্তিম আতিথেয়তা আমার হাইকিং-ট্র্যাকিং দর্শনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।

বেশ কিছুদিন থেকেই আরেকবার হাইকিং-এ যাবার পরিকল্পনা করছিলাম আমরা। তারই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন এক উপলক্ষ পেয়ে গেলাম। এই ছুটিতে ব্রুনেই-এর সবচেয়ে নয়নাভিরাম প্রদেশে হাইকিং-এ যাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম।

প্রদেশটির নাম তেমবুরং, ব্রুনেই-এর সর্ব-পশ্চিমে। আয়তন ১ হাজার ৩০৪ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা প্রায় ৯ হাজার ৫০০ জন!

উপলক্ষটা যেমন দারুণ, পরিকল্পনাটিও আমরা সেভাবেই করতে লাগলাম। হাইকিং-এর পরিকল্পনাকারী ছিলাম আমরা চারজন- আমি, সাফায়েত, আফিফ এবং সোহেল। আমাদের পুরো সফরটি ছিল ১১ জনের। সাফায়েতের বাবা-মা এবং ছোটবোনও এসেছিলেন বাংলাদেশ থেকে আমাদের সাথে বেড়াবার জন্য, আর সাথে ব্রুনেইবাসী আমরা আটজন।

দিনটি ছিল ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬। আমরা ঠিক করলাম ভোরে উঠেই বান্দার-সেরি-বেগাওয়ান (ব্রুনেই-এর রাজধানী) থেকে ফেরিতে রওনা হব।

আমরা তিনজনই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম রাজধানীর দিকে, সেখানে গিয়ে পৌঁছলাম সকাল সাড়ে ৬টায়। তেম্বুরংগামী ফেরি টার্মিনালে পৌঁছেই চোখে পড়ল ব্রুনেই নদীতে নির্মাণাধীন সুবিশাল ব্রিজ, যেটা মেইনল্যান্ডকে ওয়াটার-ভিলেজের সাথে এ বছরই যুক্ত করতে যাচ্ছে।

গাড়িগুলো ঝটপট পার্কিং-এ রেখে চটপট বেশকিছু ছবি তুলে ঠিক সাড়ে ৭টায় আমরা উঠে পড়লাম ফেরিতে। পাক্কা দুই ঘণ্টার ফেরি রাইড। ২০ মিনিট এগোনোর পর আমাদের ফেরি এসে পড়ল দক্ষিণ চীন সাগরের উন্মুক্ত অংশে। এটা ‘ব্রুনেই বে’ নামেও বহুল পরিচিত।

সাগরের ছোট্ট এই অংশটুকু পেরিয়েই মূলত পুলাউ-সিরারাউ দিয়ে তেম্বুরং প্রদেশে ঢুকতে হয়। সেখানে তেম্বুরং নদী এঁকেবেঁকে এসে মিশেছে সাগরে। সর্পিলাকারে নদীপথ ধরে আমরা উজানের দিকে এগিয়ে চললাম। পাহাড়ি, সরু এই নদীটির পুরোটা জুড়েই আছে গহীন ম্যানগ্রোভ বন। অপরূপ, চোখ-ধাঁধানো সৌন্দর্য আমাদের চারপাশে!

হঠাৎ খেয়াল করলাম, ফেরিচালক আমাদেরকে বাড়তি উত্তেজনা দেবার জন্য ফেরীর গতি বেশ খানিকটা বাড়িয়েছেন এবং নদীর বাঁকগুলোতে সজোরে ঘুরছেন। পানি ছিটকে এসে পড়ছিল আমাদের জানালায়। খুব ইচ্ছা হচ্ছিল ফেরির ডেকে গিয়ে খানিকটা দাঁড়াবার, কিন্তু গতিময় সেই ফেরি যাত্রায় উঠে দাঁড়ানোর আর সাহস হয়নি।

৯টার দিকে আমরা বাঙ্গারে এসে পৌঁছলাম, এটাই তেম্বুরং-এর রাজধানী। টার্মিনালে সকল আনুষ্ঠানিকতা সেরে বেরুতেই আমাদের গাইড হাদি ভাইকে পেয়ে গেলাম। উনি তেম্বুরং-এর  স্থানীয় বাসিন্দা, প্রাচীন ইবান উপজাতির মানুষ। অমায়িক মানুষ, অথচ খুবই চঞ্চল।

আমরা এবার উঠলাম মাইক্রোবাসে। সাঈদ ভাই এবং তার স্ত্রী হালকা নাস্তা করে ফেরার পরেই আমরা পিচঢালা পথ ধরে রওনা দিলাম। পথে আমাদের গাইড হাদি ভাই আমাদের প্রশ্নবাণে প্রায় জর্জরিত, কিন্তু উত্তর যেন তার ঠোঁটের আগায়। একইসাথে তেম্বুরং-এর ‘লং-হাউজ’, গহীন বনের ‘হেড-হান্টারস’দের গায়ে কাঁটা দেওয়া গল্প শুনতে শুনতে আমরা এগিয়ে চলেছি।

এক পর্যায়ে উনি আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমাদের ভেতরে কেউ ব্রুনেই-এর আঞ্চলিক ভাষা জানি কিনা!

আমি বললাম, ‘তেরিমা কাসিহ’, যার মালয় অর্থ ‘ধন্যবাদ’।

আফিফ, সাফায়েত, সোহেলও তাদের ভাণ্ডারে থাকা আরও কিছু শব্দ শুনিয়ে নিজেদের উপস্থিতির জানান দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আমাদের সবাইকে চমকে দিয়ে সাঈদ ভাই গড়গড় করে মালয় বলা শুরু করলেন! হাদি ভাইসহ আমরা সবাই সাঈদ ভাইয়ের দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে!

৪০ মিনিটের রাস্তা পেরিয়ে আমরা এসে পৌঁছালাম বাঙ্গারের একেবারে শেষ মাথায়। এরপর আর কোন পিচঢালা পথ নেই। রাস্তার পাশে চোখ পড়তেই অসম্ভব সুন্দর তেম্বুরং নদীর স্বচ্ছ পানি এবং দু’ধারে উঁচু পাহাড় চোখে পড়ল।

গাইডের কাছে নিরাপত্তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কিছু পরামর্শ শুনে আমরা লাইফ-জ্যাকেট নিজেদের গায়ে জড়িয়ে নিলাম। এরপর নদীর পারে আমাদের জন্য রাখা লং-বোটে উঠে পড়লাম। আমরা বোটে করে নদীর আরও উজানে এবং তেম্বুরং বনের আরও গহীনে যেতে লাগলাম।

প্রতি মুহূর্তেই যেন উত্তেজনা! কখনো আমাদের বোটগুলোতে পাহাড়ি নদীটির উত্তাল স্রোত এসে আছড়ে পড়ছে, কখনো বা আমরা ম্যানগ্রোভ বনের খুব কাছ দিয়ে নদীর পার ঘেঁষে এগিয়ে চলেছি।

নদীপথে বেশ কয়েকটি জায়গা দেখলাম মিলিয়ন বছরের পাথুরে শিলাগুলো যেন ভ্রমণকারীর দিকে তাকিয়ে আছে। যেন জানান দিচ্ছে তার মিলিয়ন বছরের সৃষ্টির আহ্বান। নদীর ঠাণ্ডা পানির ছোঁয়ার সাথে সেদিন যেন মিশেছিল ম্যানগ্রোভের ঠাণ্ডা হাওয়া। সকালের শিশির তখনও বনের গাছের পাতায় পাতায়, সেইসাথে থেমে থেমে শোনা যাচ্ছিল হর্নবিল আর ম্যাকাউয়ের ডাক। সাত সকালে বনের সেই ঝিঁঝি পোকার ডাকও শোনাচ্ছিল অসম্ভব অপার্থিব।

প্রায় দেড় ঘণ্টার নদীভ্রমণ শেষে আমরা প্রথম যাত্রা বিরতিতে এসে হাজির হলাম। ছোট্ট, সুন্দর একটা দোতলা লজ, সামনে উন্মুক্ত বারান্দা যেখানে দাঁড়িয়ে তেম্বুরং নদীর বিরামহীন ঢেউ উপভোগ করা যায়। আমরা হাত-মুখ ধুয়ে দোতলায় উঠে দেখি আমাদের জন্য ব্রুনেই-এর স্থানীয় কিছু খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।

ব্রুনেইতে খাবারের একটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এখানে প্রায় সব খাবারই মিষ্টি। মিষ্টি যেমন মিষ্টি, তরকারিও তেমনি মিষ্টি! আমি যদিও বেশ কয়েক বছর ব্রুনেই-এ আছি, তবুও এখনও মাঝে-মাঝে মিষ্টি খেলে কেমন যেন লাগে!

মজার ব্যাপার হল হয়ত হাদি ভাইয়ের সাথে পূর্ব পরিচয় থাকার কারণে তিনি সকালের খাবারে বেশ ঝালের ব্যবস্থাও করেছিলেন! ব্রুনেই-এর বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী পিঠাও ছিল। নাস্তা সেরে আমরা প্রস্তুতি নিলাম বোটে করে বনের আরও ভেতরে ঢোকার, যেখান থেকে আমরা হাইকিং শুরু করব।

এবারে আমরা চারটি বোটে নিয়ে রওনা করলাম। আমি, আফিফ আর সোহেল উঠলাম এক বোটে, সাফায়েত, তার স্ত্রী ও সাফায়েতের মা আরেক বোটে, সাফায়েতের বাবা, ছোটবোন এবং গাইড তৃতীয় বোটে এবং সাঈদ ভাই ও তার স্ত্রী আরেক বোটে উঠে পড়লেন।

আরো এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে আমরা অবশেষে পৌঁছলাম ‘উলু তেম্বুরং ন্যাশনাল পার্ক’-এ। এখান থেকেই আমাদের হাইকিং-এর ট্রেইলের শুরু। এই বনটি এতটাই প্রিস্টিন যে বনের ভেতরে তেমন কোন মানবসৃষ্ট স্থাপনা চোখে পড়েনি। এমনকি কখনোই নাকি এ বনের গাছ কাটা হয়নি এবং ভেতরে কোন মানবসৃষ্ট রাস্তাও নেই!

যাত্রাপথে আফিফের কাছে জানতে পারলাম, এ বনের প্রতি এক হেক্টরে যে পরিমাণ গাছের প্রজাতি আছে, সম্পূর্ণ নর্থ-আমেরিকায়ও নাকি সেটা নেই! আমাদের উৎসাহ যেন দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়ে গেল। ন্যাশনাল পার্কের রেজিস্ট্রেশন কাউন্টারে নিজেদের নাম, পরিচয় লিখতেও যেন আর তর সইছিল না!

দ্রুততার সাথে আনুষ্ঠানিকতা সেরে আমরা নিজেদের হাইকিং গিয়ারগুলো ঝালিয়ে নিলাম। মুহুর্তেই মনে পড়ে গেল গতবারের ভয়ানক অভিজ্ঞতার কথা। একবার পা পিছলে লাইমস্টোন গুহা থেকে আট ফুট নিচে পড়ে গিয়েছিলাম! তাই নিজেকে আরও সাবধানে পথ চলার পরামর্শ দিয়ে প্রস্তুতি নিলাম।

আমাদের লক্ষ্য ছিল পাহাড়ের চূড়ার কাছাকাছি যাওয়া। তেম্বুরং বনের যে অংশে আমরা হাইকিং করছিলাম, সে অংশে পাহাড়ের গড় উচ্চতা ছিল প্রায় ৪ হাজার ফুট। হাইকিং-এর শুরুতেই আফিফের জিপিএস দিয়ে চট করে দেখে নিলাম এ সম্পর্কীত সকল তথ্য। শুরু হল আমাদের পথচলা। হাইকিংটার নাম দিয়েছিলাম ‘অ্যাডভেঞ্চার ক্যানোপি-ফরেস্ট’।

ততক্ষণে প্রায় মাঝবেলা, মাথার ওপরে ইকুয়েটরিয়াল সূর্য। ৩৩ ডিগ্রি তাপমাত্রার সাথে ৮০ শতাংশ আর্দ্র আবহাওয়া। পা ফেলা কষ্টকর হচ্ছিল। তবুও দমে যাবার পাত্র আমরা নই। ধীরে ধীরে আমরা পাহাড় বেয়ে এগোতে লাগলাম।

চারপাশে তখন গভীর বন, ভর দুপুর বেলায়ও কিছু জায়গা ছিল প্রায় অন্ধকার। আমাদের ট্র্যাকিং ট্রেইলের বেশ কিছু জায়গা ছিল পাথুরে, কিছু ছিল পিচ্ছিল। সেজন্যই আমাদের গাইড সাবধানে এগোনোর পরামর্শ দিল।

পথিমধ্যে আমরা পেরুলাম অসাধারণ ঝুলন্ত দুটো সেতু। পাহাড়ের বুক চিরে এঁকেবেঁকে বয়ে চলা নদীর সাক্ষ্য বহন করে চলেছে সেতু দু’টো। বনের পথ ধরে আমরা যতই উপরে উঠেছি, ততই যেন অদ্ভুত এক নীরবতা নেমে আসছিল। আরেকটু উপরে ওঠার পর আমাদের কয়েকজনের দম প্রায় ফুরিয়ে যাবার অবস্থা। তাই পাহাড়ের ঢালেই কিছুক্ষণ জিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।

নাম না জানা নানান পাখির ডাক যেন আমাদের বরণ করতেই। হঠাৎ শুনলাম ম্যাকাউয়ের ডাক, কিছুদূরেই এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফিয়ে পার হলো বুনো উল্লুকের দল। শুনেছি এই বনে কালে-ভদ্রে আকাশি চিতাবাঘেরও দেখা মেলে। তবে আমরা কেউ পথে চিতাবাঘ দেখতে মোটেও ইচ্ছুক ছিলাম না!

আড়াই ঘণ্টা হাইকিং-এর পর আমরা যখন চূড়ার প্রায় কাছাকাছি, তখনই গাইড ক্যানোপি-ওয়াকওয়ের ব্যাপারে মুখ খুললেন। আরেকটু সামনে এগিয়েই দেখি প্রায় ৫০ মিটার লম্বা সুউচ্চ মেটাল টাওয়ার। সেটা আরও চারটি ৪০ মিটার টাওয়ার সাথে এমনভাবে যুক্ত যেখান থেকে সম্পূর্ণ বনের উপরিভাগের ৩৬০ ডিগ্রি দেখা সম্ভব!

শেষটায় আমি, সাফায়েত, আফিফ আর সোহেল একেবারে টাওয়ারের চূড়ায় ওঠার সিদ্ধান্ত নিলাম। টাওয়ারের সিঁড়িগুলো ছিল প্রায়-উন্মুক্ত এবং খাড়া; গায়ে কাঁটা দেওয়ার মত। মনে সাহস সঞ্চার করে আমরা উপরে উঠতে লাগলাম। যতই ওপরে উঠছি, মনে হচ্ছিল এই সিঁড়ির আর বুঝি কোন শেষ নেই!

ধীরে ধীরে আমরা তিনজনই প্রথম টাওয়ারে উঠে গেলাম। সেখানে নিজেকে কিছুটা সুস্থির করে বেশ কিছু ছবি তোলার চেষ্টা করলাম। এরপর ধীরে ধীরে দ্বিতীয় টাওয়ার পেরিয়ে সর্বোচ্চ টাওয়ারটিতে উঠলাম আমরা চারজন।

প্রথমেই চোখে পড়ল দূর পাহাড়ের সারি আর সারিবদ্ধ উর্ধ্বমুখী গাছগুলো। সে এক অবর্ণনীয় সৌন্দর্য! বর্ণিল জঙ্গল যেন পরম মমতায় নিজেকে উৎসবের রঙে সাজিয়েছে, চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। তার সাথে আকাশের নীলের বিরামহীন মাখামাখি! বেশ কিছুক্ষণ আমরা একেবারেই চুপ করে বসে রইলাম। চমৎকার কিছু ছবি তুলে প্রায় এক ঘণ্টা পর আমরা নিচে নেমে এলাম।

এরপর সবাই মিলে ‘ফিশ-স্পা ঝরনা’তে গোসল করে কটেজে ফিরে এলাম। অসাধারণ এই হাইকিং শেষে ফেরার সময় হয়ে এল। ফিরবার পথে হাদি ভাইকে বিদায় জানালাম।

ঠিক যাবার মুহূর্তেই উনি বললেন, "যে ফেরি দিয়ে এখন তোমরা শহরে ফিরে যাবে, আমরা সেটাকে আদর করে ডাকি, ‘উড়ন্ত কফিন’!”

ততক্ষণে সকালে ফেরির দুঃসাহসী বাঁক ঘোরানোর রহস্য বুঝতে আর বাকি রইল না!     

লেখক: প্রবাসী বাংলাদেশি

ইমেইল: akmeahsan@yahoo.com