নিউ ইয়র্কে শুরু হল ফোবানা সম্মেলন 

নতুন প্রজন্মকে বাঙালি সংস্কৃতিতে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি প্রবাসের অভিজ্ঞতায় বাংলাদেশের কল্যাণে সম্মিলিত প্রয়াস ধরে রাখার প্রত্যয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে শুরু হয়েছে ফোবানা সম্মেলন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Sept 2015, 01:10 PM
Updated : 5 Sept 2015, 04:25 PM

শুক্রবার রাতে নিউ ইয়র্কের জ্যামাইকায় ইয়র্ক কলেজ পারফর্মিং আর্টস মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন সমাজকর্মী ডা. কালি প্রদীপ চৌধুরী। 
 
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়ান-আমেরিকান বিষয়ক উপদেষ্টা ড. নীনা আহমেদ, মার্কিন কংগ্রেসে পররাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির সদস্য গ্রেস মেং, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে এ মোমেন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হেলাল মোর্শেদ খান বীর বিক্রম, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী, নিউ ইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট লেটিসিয়া জেমস প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেট থেকে অনেক প্রবাসী সংগঠনের প্রতিনিধিরা এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন সপরিবারে।
ওবামার উপদেষ্টা নীনা আহমেদ বলেন, “এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আহ্বান জানাচ্ছি, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে দেওয়া অধিকারগুলো সম্পর্কে আরও বেশি সজাগ হবার জন্যে। একইসাথে মূলধারার রাজনীতিতে আরও সক্রিয় হতে হবে সবাইকে।”

নিউ ইয়র্কে ফোবানা সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য রাখছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এশিয়া বিষয়ক উপদেষ্টা ড. নীনা আহমেদ। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

ফোবানা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন কংগ্রেস সদস্য গ্রেস মেং। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। 

কংগ্রেস সদস্য গ্রেস মেং বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে পালনের জন্যে কংগ্রেসে বিল তুলেছিলেন তিনি।

“নিউ ইয়র্কের পাবলিক স্কুলে ঈদের দুদিন ছুটি ঘোষণার জন্যে আমি অনেক আগে থেকেই সোচ্চার ছিলাম। সিটি মেয়রের মাধ্যমে এটি কার্যকর হয়েছে।”

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোমেন বলেন, “বাংলাদেশের এগিয়ে চলার অনেক পরিকল্পনা আজ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনুসরণ করা হচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে দারিদ্র্য মুক্তির লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের যে ১৭টি এজেন্ডা নির্ধারণ করা হয়েছে তার অধিকাংশই বাংলাদেশের প্রস্তাব ছিল।”

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, “প্রবাসের বাঙালিরা মেধার বিনিয়োগ ঘটিয়ে বাংলাদেশের সুনাম ছড়িয়ে দিচ্ছেন সর্বত্র।”

কাউন্সিলম্যান ড. নূরন্নবী বলেন, “পাশ্চাত্যে বাঙালির মেধা সমাদৃত হচ্ছে ভিন্নভাবে। সেই মেধাকে আমরা এখন মাতৃভূমির কল্যাণে কাজে লাগাতে চাই।”

আয়োজনে সন্তোষ প্রকাষ করে গ্লোবাল ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিজাম চৌধুরী বলেন, “প্রিয় মাতৃভূমির জন্যে প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন-এর চেয়ে আনন্দের আর কী থাকতে পারে!”

আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বেদারুল ইসলাম বাবলা বলেন, “২৮ বছর আগে যে প্রত্যয়ে ফোবানার যাত্রা শুরু হয়েছে, তার বাস্তবায়ন করতে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে রাখতে হবে।”

সম্মেলন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জাকারিয়া চৌধুরী । ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।

নিউ ইয়র্কে ফোবানা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সমবেতদের একাংশ। ছবি-বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। 

কমিটির সদস্য সচিব জাকারিয়া  চৌধুরী বলেন, উদ্বোধনী পর্বে ‘বিশ্ব মানবতায় দেশপ্রেম’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেড় শতাধিক তরুণ-তরুণী অংশ নিচ্ছেন, যারা আমেরিকায় বড় হয়েছেন।

“এভাবেই আমরা বাংলাদেশি সংস্কৃতির সাথে নতুন প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করেছি।”

বাংলাদেশ, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সমবেত কণ্ঠে দেশের গান ছাড়াও রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান যুগলকণ্ঠে গেয়ে শোনান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাগানিয়া কিছু গান।

সম্মেলন কেন্দ্রে বসেছে বিভিন্ন পণ্য ও খাদ্যের স্টল। সেবামূলক কয়েকটি সংস্থাও পরামর্শ দিচ্ছে স্বাস্থ্য-চিকিৎসাসহ বিভিন্ন বিষয়ে।

সম্মেলনের দ্বিতীয় ও শেষ দিনে বিভিন্ন বিষয়ে মোট ১৫টি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও একটি মুক্ত আলোচনা হবে শেষ দিন।

প্রবাস জীবনের গল্প ও অভিজ্ঞতা এখন থেকে আমাদের সরাসরি জানাতে পারেন। পুরো নাম ও সংশ্লিষ্ট ছবিসহ লেখা পাঠিয়ে দিন এই ঠিকানায়  probash@bdnews24.com