দল থেকে বহিষ্কৃত আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ নিয়ে জটিলতার নিষ্পত্তিতে নির্বাচন কমিশনে চিঠি গেছে সংসদ থেকে।
Published : 13 Jul 2015, 04:39 PM
সোমবার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সার্বিক বিষয় পর্যালোচনার জন্য আমরা বসব।”
লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও আগের নজিরগুলো বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে এক অনুষ্ঠানে হজ নিয়ে মন্তব্যের জের ধরে সমালোচনার মুখে দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পাশাপাশি মন্ত্রিসভা থেকেও বাদ দেওয়া হয় লতিফ সিদ্দিকীকে।
দেশে ফেরার পর ওই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মামলায় নয় মাস কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পান ৭৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিক।
নয় মাস আগে দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর তার সংসদ সদস্য পদ টিকে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এর মধ্যেই স্পিকার জটিলতা অবসানের উদ্যোগ নিলেন।
বিকালে বাহকের মাধ্যমে ইসিতে স্পিকারের চিঠি পাঠানোর খবর জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব হেলাল চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে চিঠিটি গ্রহণ করা হয় বলে ইসির আইন শাখার যুগ্ম সচিব মো. শাহজাহান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, এখন লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে ইসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, মেম্বার অফ পার্লামেন্ট (ডিটারমিনেশন অব ডিসপিউট) অ্যাক্ট অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনে লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে মতামত চেয়ে সংসদ থেকে এ চিঠি গেছে।
সংসদীয় কার্য-প্রণালী বিধির ১৭৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, নির্বাচনের পর কোনো সদস্য সম্বন্ধে যদি এমন বিরোধ দেখা যায় যে, ৬৬ অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত অযোগ্যতাগুলোর কোনো একটি কারণে তিনি অযোগ্য বিবেচিত হবেন কি না, অথবা সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তার আসন শূন্য হবে কি না, তাহলে স্পিকার ওই বিষয়টি নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন।
দফা (২) এ বলা আছে, যদি নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত হয় যে, ওই সদস্য অযোগ্য হয়েছেন, অথবা তার আসন শূন্য করা উচিত, তাহলে তিনি আর সদস্য থাকবেন না।
২০১৪ সালের নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৪ আসনে আওয়ামী লীগের টিকিটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন লতিফ সিদ্দিকী। এর আগে তিন বার ওই আসনে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।
ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সংসদের চিঠি পেয়েই এই সংক্রান্ত আগের নজিরের ফাইলগুলো কমিশনে উপস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা।
নবম সংসদে ভোলার সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান, টাঙ্গাইলের সাবেক সেনা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম ও চাঁদপুরের মহিউদ্দীন খান আলমগীরের বিষয়ে ইসির সিদ্ধান্তগুলো কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলেন, যেহেতু লতিফ সিদ্দিকী ফ্লোর ক্রস কিংবা পদত্যাগ করেননি, সেহেতু সংসদ সদস্য পদ যাওয়ার বিষয়টি একটু অস্পষ্ট। আবার দল থেকে বহিষ্কার হলেও তার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হিসেবে টিকে থাকার আইনগত সুযোগ নেই।