লতিফ সিদ্দিকী: ইসি থাকবে সংসদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়

দল থেকে বহিষ্কৃত আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ থাকা না থাকার বিষয়ে সংসদের স্পিকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

মঈনুল হক চৌধুরীবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2014, 04:00 PM
Updated : 26 Oct 2014, 04:00 PM

বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ইসিতে পাঠানো হবে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যের পর ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, দলের সিদ্ধান্ত পেলেও তারা আগ বাড়িয়ে কিছু করবেন না।

হজ নিয়ে মন্তব্যের পর প্রথমে মন্ত্রিসভা এবং এরপর আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত লতিফ সিদ্দিকীর সংসদ সদস্য পদ থাকা নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে, সংবিধানেও এই বিষয়টি স্পষ্ট করে লেখা নেই। 

সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ বলেছেন, বিদ্যমান আইন অনুযায়ী ‘ফ্লোর ক্রসিংয়ে’ না পড়ায় লতিফ সিদ্দিকী দল থেকে বাদ পড়লেও সংসদ সদস্য পদে থাকবেন। তবে আশরাফ বলছেন, সদস্যপদ থাকবে না।

শুক্রবার শুক্রবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলে লতিফ সিদ্দিকীর প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল হয়। ওই সিদ্ধান্ত ইসিতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে আশরাফ সেদিন জানিয়েছিলেন।

রোববার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে লতিফ সিদ্দিকী সংক্রান্ত কোনও চিঠি পৌঁছেনি বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ।

“আমরা এখনও কোনও কিছু পাইনি,” জানিয়ে এই বিষয়ে আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। অন্য কমিশনাররাও আগাম কিছু বলতে চাইছেন না।

ইসির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দলীয় চিঠি পেলেও স্পিকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হবে কমিশনকে।”

ইসির জ্যেষ্ঠ ওই সহকারী সচিব বলেন, “দল থেকে বহিষ্কারের বিষয়টি স্পিকারের কাছে গেলে, তখন দ্য মেম্বারস অব পার্লামেন্ট ডিটারমিনেশন অব ডিসপিউট অ্যাক্ট অনুযায়ী ৩০ দিনের তা কমিশনকে পাঠাতে হবে। স্পিকারের চিঠি পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে কমিশন শুনানি করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে।”

আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, সংসদ সদস্য পদ যার হুমকির মুখে

এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দল বা দলের কেউ এবং সংসদ সদস্যের বক্তব্য শুনতে হবে কমিশনকে।

স্পিকারকে না জানিয়ে ইসিকে চিঠি দিলেও তা কার্যকর হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে এক কর্মকর্তা জানান, জাপা চেয়ারম্যানের সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে অভিযোগ পেলেও ইসি কিছু করতে পারেনি। এক্ষেত্রেও তাই হতে পারে।

সংসদ সদস্য পদ বাতিলের বিষয়ে সংবিধানের ৭০ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনও নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনীত হয়ে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন অথবা সংসদে দলের বিপক্ষে ভোট দেন তাহলে সংসদে তার আসন শূন্য হবে।

চারদলীয় জোটের আমলে অষ্টম জাতীয় সংসদে বিএনপির টিকিটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য আবু হেনাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

তার সংসদ সদস্য থাকবে কি না- বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তখন সংবিধানের ওই বিধান (৭০ অনুচ্ছেদ) অনুযায়ী আবু হেনার সদস্য পদ রাখার সিদ্ধান্ত দেন তৎকালীন স্পিকার মুহম্মদ জমিরউদ্দিন সরকার। দল থেকে বহিষ্কৃত হলেও তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়নি।

একইভাবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে নবম জাতীয় সংসদে একই ধরনের ঘটনা ঘটে।

লতিফ সিদ্দিকীর বিষয়ে বর্তমান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী সম্প্রতি সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় বলেন, “এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। এটা আইনি বিষয়।”

নিউ ইয়র্কে হজ নিয়ে মন্তব্যের পর সব পদ হারানোর পাশাপাশি কয়েক ডজন মামলার আসামি লতিফ সিদ্দিকী বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। তিনি কলকাতায় থাকতে চাইছেন বলে তার ঘনিষ্ঠরা জানান।