বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদকে একমাসেও দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘খুঁজে বের করতে না পারায়’ খালেদা জিয়া ‘উদ্বিগ্ন’ বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ।
Published : 11 Apr 2015, 03:14 AM
শুক্রবার গুলশানে সালাহ উদ্দিন আহমেদের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের সহমর্মিতা জানানোর পর মওদুদ দলের চেয়ারপারসনের এই উদ্বেগের কথা জানান।
তিনি বলেন, “সালাহ উদ্দিন আহমেদকে অপহরণের ৩০ দিন হয়ে গেল। এখনো তাকে খুঁজে বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দলের চেয়ারপারসন এতে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। দলের পক্ষ থেকে তার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা ও একাত্মতা প্রকাশ করতে এখানে এসেছি।’’
গত ১০ মার্চ রাতে উত্তরার একটি বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।
মওদুদ বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সরকারের উচিৎ সালাহ উদ্দিনকে খুঁজে বের করা। তাকে খুঁজে বের করতে না পারায় দায় তারা এড়াতে পারে না।”
স্বামীর খোঁজে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে গত ১৯ মার্চ ও ৭ এপ্রিল দুই দফা স্মারকলিপি দিয়েছেন সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
তিনি উচ্চ আদালতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আদালতকে বলা হয়েছে, পুলিশ সালাহ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেনি, তার কোনো খোঁজও পাওয়া যায়নি। হাই কোর্টে এ বিষয়ে আগামী ১৫ এপ্রিল আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে।
মওদুদ আহমেদ ‘নিখোঁজ’ এই বিএনপি নেতার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তার ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদকে পাশে বসিয়ে সমবেদনা জানান।
হাসিনা আহমেদ আবারও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে বলেন, “আমার স্বামীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে। তিনি দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে খুঁজতে আমরা গুলশানের এই বাসায় চারবার তল্লাসি চালিয়েছিল। বাসার স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। আমি আবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলছি, আমার স্বামীকে জনসম্মুখে হাজির করতে তিনি যেন তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেন।”
তিনি অভিযোগ করেন, উত্তরার সেই বাসা থেকে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ‘তুলে নেওয়ার’ তিনদিন আগে গুলশানের বাসা থেকে তার দুই গাড়ি চালক, একজন বাবুর্চি ও একান্ত সহকারীকে ‘আটক করে নির্যাতন করছে’ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সাবেক সাংসদ হাসিনা বলেন, “আমার স্বামী কী অন্যায় করেছে যে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে? তুলে নেওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন কেন তা অস্বীকার করছে?”
মওদুদ আহমেদ বলেন, “যেসব প্রতিবেদন আমাদের কাছে আছে, সালাহউদ্দিনের পরিবারের কাছে থেকে যা জেনেছি, তাতে আমরা ও তার পরিবার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীই তুলে নিয়ে গেছে এবং সালাহ উদ্দিন বেঁচে আছেন।’’
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯১-৯৬ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এপিএস ছিলেন সালাহ উদ্দিন। পরে তিনি চাকরি ছেড়ে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য হন এবং প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
তার দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে সৈয়দ ইব্রাহিম আহমেদ কানাডায় ও বড় মেয়ে পারমিজ আহমেদ ইকরা মালয়েশিয়ায় লেখাপড়া করেন। ছোট ছেলে সৈয়দ ইউসুফ আহমেদ ও ছোট মেয়ে ফারিবা আহমেদ রাইদা দেশেই থাকেন।