স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সব করা হবে: আবদুল বাতেন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচন নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে প্রয়োজনীয় সব কিছু করা হবে বলে জানিয়েছেন রিটার্নি কর্মকর্তা আবদুল বাতেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 March 2015, 02:45 PM
Updated : 28 March 2015, 02:45 PM

শনিবার বিকালে চট্টগ্রাম সার্ভার স্টেশনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সিটি নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

এবারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল বাতেন বলেন, চট্টগ্রামের মত বড় ও জনবহুল মহানগরীতে পেশী শক্তি প্রদর্শন সম্ভব নয়।

“নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে আমাদের সবরকম প্রস্তুতি থাকবে। ১৪ জন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার পাশাপাশি ৪০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৩-১৪ জন বিচারিক হাকিম দায়িত্ব পালন করবেন।”

ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ২২ জন করে সশস্ত্র পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি আনসার-ভিডিপি, র‌্যাব এবং টহল দল নগরীতে দায়িত্ব পালন করবে জানিয়ে বাতেন বলেন, প্রয়োজনে সেনাবাহিনী নিয়োগের বিষয়ে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।

ভোট গ্রহণের দিন আইনশৃঙ্খলাজনিত কোনো ধরনের ব্যত্যয়ের বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখারও আহ্বান জানান বাতেন।

চট্টগ্রামে নির্বাচন পূর্ববর্তী পরিস্থিতি বিষয়ে আবদুল বাতেন বলেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেছিল। সেখানে শুরু থেকেই আইন ভঙ্গের প্রবণতা ছিল।

“এখানে তেমন নয়। ছোট খাটো আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ ছাড়া এখন পর্যন্ত আইন ভঙ্গের তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। চট্টগ্রামের প্রার্থীরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই মনে হচ্ছে। গত কয়েক মাসের সহিংস ঘটনা প্রবাহে নগরবাসীর মনে শঙ্কা থাকতে পারে। তবে সেটা কিছুদিনের মধ্যেই কেটে যাবে আশাকরি।”

ভোটারদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আবদুল বাতেন বলেন, “উৎসব মুখর পরিবেশে আনন্দের সঙ্গে ভোট কেন্দ্রে আসবেন এবং ভোট দিয়ে আনন্দ নিয়ে ফিরে যাবেন।

“আমরা কোনো দলের চাকরি করি না। সরকারি দলেরও না বিরোধী দলেরও না। আমরা নির্বাচন কমিশনের। কাজেই নিরপেক্ষতা প্রমাণের সুযোগ আমাদের সবচেয়ে বেশি।”

আবদুল বাতেন বলেন, “আমরা বড়জোর বদলি হব এর বেশি কিছু না। যে কোনো কিছুর বিনিময়ে নিরপেক্ষ থাকবই। আমাদের দায়বদ্ধতা শুধু কমিশনের কাছে।”

নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আবদুল বাতেন বলেন, “এখনো মৌখিকভাবে সবাইকে বুঝিয়ে বলছি। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পরই এ ধরনের সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কঠোরতা অবলম্বন করা হবে।”   

২০১০ সালের ১৭ জুন সিসিসি নির্বাচনের ভোট গ্রহণের পর ওই রাতে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে ফলাফল ঘোষণার সময় বাইরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে এক ঘণ্টা ফল ঘোষণা বন্ধ ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল বাতেন বলেন, “ওই ধরনের ঘটনার বিষয়টি আমাদের জানা আছে। এবার যাতে সেরকম কিছু না হয় সেজন্য ফলাফল ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (আরএমএস) নতুনভাবে সাজানো হয়েছে।

“প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ল্যাপটপ ও মডেম থাকবে। ভোট গণনা শেষে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ফলাফল ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমাদের ও ঢাকায় কমিশনকে জানিয়ে দেবে।”

বাতেন বলেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত ফলাফল পেলেই আমরা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেব। কিন্তু যদি অতীতের মত ভোট কেন্দ্র ঘেরাও বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে বাধা দেওয়া হয় তবে ইন্টারনেটে পাওয়া ফলাফলের ভিত্তিতে ফল ঘোষিত হবে।

এবার সিটি নির্বাচনে প্রার্থী ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতেও (সিএমএস) পরিবর্তন আসছে জানিয়ে বাতেন বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সেটি স্ক্যান করে কমিশনে পাঠিয়ে দেব।

“এরপর দুয়েক দিনের মধ্যেই মনোনয়ন পত্রের অনুলিপি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটাররা দেখতে পাবেন।”