স্মৃতিসৌধেও যাননি খালেদা

ভাষাশহীদ দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে না যাওয়ার পর স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধেও যাননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 March 2015, 05:54 AM
Updated : 26 March 2015, 07:58 AM

তবে তার পক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান ও আবদুল মঈন খানসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা শ’খানেক কর্মীকে নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় সাভারে শহীদবেদীতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময়ে তারা কিছুসময় বেদীর সামনে নীরবে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করা বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত ৩ জানুয়ারি থেকে নিজের গুলশানের কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। গত আড়াই মাসের বেশি সময় তিনি সেখান থেকে বের হননি।

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই খালেদার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়ায় মারা যান। তার লাশ দেশে আনার পর ওই কার্যালয় থেকেই ছেলেকে শেষ বিদায় জানান বিএনপিনেত্রী।

লাগাতার অবরোধ ডেকে নিজের কার্যালয়ে থাকা খালেদা বিভিন্ন মামলার শুনানিতেও অনুপস্থিত থাকছেন। এ কারণে জিয়া ট্রাস্টের দুই মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে।

গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষাশহীদ দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে না যাওয়ায় সমালোচনায় পড়তে হয় খালেদা জিয়াকে। খালেদার ওই কার্যালয়ে অবস্থান করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা প্রশ্ন তুলে আসছেন।

বিএনপি স্পষ্ট না বললেও আইনজীবীদের কথায় স্পষ্ট যে, খালেদা একবার কার্যালয় থেকে বের হলে তাকে আর সেখানে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে তারা আশঙ্কা করছেন।   

প্রতিবার স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার পর খালেদা জিয়া চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের কবরেও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেও এবার তিনি সেখানেও যাননি।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন হিসেবে খালেদা জিয়া যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থাকে বলা হয়েছে ‘অস্বাভাবিক’। 

দেশবাসীসহ প্রবাসীদের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেছেন, “এবারের এমন এক অস্বাভাবিক পটভূমিতে আমাদের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস এসেছে, যখন দেশ থেকে গণতন্ত্র নির্বাসিত।”

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ‘মানুষের লুণ্ঠিত অধিকার ফিরিয়ে আনতে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।

সাভারের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের মুখে ‘লও লও লও সালাম/ শহীদ বীররা লও সালাম’, ‘লও লও লও সালাম/ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়া/ লও লও লও সালাম’ স্লোগান শোনা যায়।

দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহজাহান ওমর, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, আবদুল মান্নান, জিয়াউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আসাদুল করীম শাহিন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সেলিম রেজা হাবিব, মহানগর বিএনপির আবু সাঈদ খান খোকন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেন, মহিলা দলের নুরে আরা সাফা, মহানগর সভাপতি সুলতানা আহমেদ, রাশেদা বেগম হীরা, উলামা দলের হাফেজ আবদুল মালেক, মৎস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার এম এ মালেক, মনির খান,  সালাহউদ্দিন ভুঁইয়া শিশির, কৃষক দলের শাহজাহান মিয়া সম্রাট, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম বাচ্চুসহ যুব দল, ছা্ত্র দল, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা ছিলেন।

পরে মাহবুবুর রহমান ও মঈন খানসহ নেতা-কর্মীরা শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে গিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনায় মোনাজাত করেন।

পরে মহানগর বিএনপি, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল, ড্যাব, জাসাস, ছাত্র দলের পক্ষে আলাদাভাবে জিয়ার কবরে ফুল দেওয়া হয়।

শেরেবাংলা নগরে সংসদ ভবন সংলগ্ন এই সড়কে পুলিশের ব্যারিকেড থাকায় চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি এদিন কম ছিল।