নাশকতার জন্য অবরোধ আহ্বানকারী খালেদা জিয়াকে দায়ী করে তার ‘সুমতি’ প্রত্যাশা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 24 Jan 2015, 09:00 PM
তিনি বলেছেন, “আমি চাই, বিএনপিকে নেত্রীকে আল্লাহ সুমতি দিক। এই ধরনের মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি সে বন্ধ করুক।
“কত মায়ের কোল যে তিনি খালি করে দিচ্ছেন, আর কত মানুষকে পঙ্গু করে দিচ্ছেন... আর যারা এভাবে আগুনে পুড়ে গেছে, তারা আর কখনও কাজ করে খেতে পারবে না।”
শনিবার দুপুরে গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সে গোপালগঞ্জে দুটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও একটির ভিত্তিস্থাপনের সময় একথা বলে শেখ হাসিনা।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের টানা অবরোধে গাড়িতে আগুন দেওয়ায় এই পর্যন্ত ৩০ জনের বেশি মারা গেছেন।
অবরোধে সহিংসহতার শিকার সাধারণ মানুষদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আর কত? এটার একটা অবসান হওয়া উচিৎ।”
বিএনপি-জামায়াত জোটের আন্দোলনের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী।
“যাদের হাতে মানুষের পোড়া লাশের গন্ধ, যাদের হাতে জ্যান্ত মানুষের পোড়া গন্ধ, যাদের হাতে মানুষ খুন হয়, তারা কার জন্য রাজনীতি করে? সেই প্রশ্নটাই আমার।”
ভিডিও কনফারেন্সে নিজ জেলা গোপালগঞ্জের মানুষদের সঙ্গে কথা বলার সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের গত ছয় বছরের উন্নয়নচিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে ‘উন্নয়নে বাধা’ দিতে নাশকতার প্রসঙ্গও টানেন তিনি।
“অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, পরিতাপের বিষয়, কোনো কারণ ছাড়া, কোনো ইস্যু ছাড়া, এই বিএনপি-জামায়াত জোট হঠাৎ করে আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা শুরু করেছে।”
“এই ধরনের আন্দোলন আমাদের জীবনে আমরা কখনও দেখি নাই। আন্দোলন তো আমরা বহু করেছি। নিরীহ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, দরিদ্র মানুষ অথবা বিভিন্ন পেশার মানুষদেরকে নির্মমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা- এই রাজনীতি কিন্তু আমরা দেখিনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
বিএনপি-জামায়াত জোট ‘মানুষ পুড়িয়ে মারার’ রাজনীতি করে যাচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আজকে এই যে মানুষ পুড়িয়ে মারার যে কালচার শুরু হয়েছে, যাতে মানুষের জীবনে একটা ভয়ভীতি সৃষ্টি করে দেয়া। যে উন্নয়নগুলি হচ্ছে সেটা প্রতিরোধ করা। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, তার দল আন্দোলন করতে গিয়ে বহু নিপীড়ণের শিকার হলেও কখনও মানুষের ওপড় ‘হামলা’ চালায়নি।
বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখা প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। আমাদের একটাই কাজ স্বাধীনতার সুফল প্রত্যেক মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানো।”
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া উপজেলায় মধুমতি নদীর ওপর নববির্মিত শেখ লুৎফর রহমান সেতুর (পাটগাতী সেতু) উদ্বোধন, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী এবং নড়াইল জেলার লোহাগড়ার মধ্যবর্তী মধুমতি নদীর ওপর ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিস্থাপন এবং নবনির্মিত ‘টুঙ্গিপাড়া বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট’ উদ্বোধন করেন।