নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এবং খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে তালা মারার প্রতিবাদে দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Published : 05 Jan 2015, 02:17 PM
সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা এবং নিজের কার্যালয়ে দলীয় চেয়ারপারসন কার্যত অবরুদ্ধ থাকার মধ্যে সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি সমর্থিত পেশাজীবীদের এক সমাবেশে বক্তব্য দিতে আসেন তিনি।
৫ জানুয়ারি ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ ও ধরপাকড়ের মধ্যে কয়েকদিন পর প্রকাশ্যে এসে ফখরুল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা উদ্ধৃত করে বলেন, “লাথি মার ভাঙরে তালা, যত সব বন্দিশালায় আগুন জ্বালা।”
সমাবেশের পর ফখরুল, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানসহ কয়েকজন জাতীয় প্রেসক্লাবের ফটক দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইলে বাইরে অবস্থানরত সরকার সমর্থকরা বাধা দেয়।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষে মারামারিও বেঁধে যায়। তখন সাংবাদিক নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ফখরুলসহ বিরোধী দলের নেতারা প্রেসক্লাবের ভেতরেই অবস্থান নেন।
পাল্টাপাল্টি সমাবেশে উত্তেজনায় ঢাকায় সভা-সমাবেশে পুলিশের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি সমর্থিত সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, যার আহ্বায়ক সাংবাদিক নেতা রুহুল আমীন গাজী।
দশম সংসদের বছরপূর্তির দিন ৫ জানুয়ারি বিএনপি সমাবেশ ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছিল। কিন্তু একই দিন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলও ঢাকায় সমাবেশ ডাকলে সব ধরনের সমাবেশ বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
এর মধ্যে গত শনিবার রাতে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে অবস্থানরত যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে পুলিশ তুলে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তারপর থেকে ওই কার্যালয়ে তালা ঝুলছে, ওই এলাকা পুলিশ ঘিরে রেখেছে।
অন্যদিকে খালেদা জিয়া গুলশানের কার্যালয়ে পুলিশি বেষ্টনির মধ্যে রয়েছেন। তার কার্যালয়ের বাইরেও ঝুলছে তালা। তবে পুলিশ বলছে, খালেদার নিরাপত্তার জন্য এই বন্দোবস্তু নিয়েছে তারা।
পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশে বক্তব্যে সরকারের আচরণের নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, “আজকের এই দিন জাতীয় জীবনে কলঙ্কিত দিন, কালো দিন। এই দিনে ভোটের অধিকার হারিয়েছি। জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে এই সরকার।
“গতকাল থেকে আপনারা দেখেছেন, সারা দেশের কী অবস্থা তারা করেছে। তারা যেভাবে নৌপথ, সড়কপথ বন্ধ করে সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে, তাতে মনে হয় তারা নিজেরাই যেন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।”
খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়নি বলে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “এরা মিথ্যাবাদী, এরা প্রতারক, এরা একটিও সত্য কথা বলে না।
“এই নাকি তাদের গণতন্ত্র। হায়রে সেলুকাস, কী বিচিত্র এ দেশ! একাত্তরে যে গণতন্ত্রের জন্য তারা লড়াই করেছিল, সেই গণতন্ত্রই আজকে তারা হরণ করছে।”
“বাকশালের সময় জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল। আজকেও তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়।”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে হটাতে না পারলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে না বলেও দাবি করেন তিনি।