সোমবার সারাদেশে হরতাল

গাজীপুরে হরতালের দুদিন পর একই কর্মসূচি সোমবার সারাদেশে ডেকেছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Dec 2014, 11:55 AM
Updated : 29 Dec 2014, 12:08 PM

গাজীপুরে সমাবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদ এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ সব রাজনৈতিক নেতার মুক্তি দাবিতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন।

ছাত্রলীগের প্রতিরোধের ঘোষণায় ১৪৪ ধারা জারির পর জনসভা করতে না পেরে শনিবার গাজীপুরে হরতাল ডেকেছিল ২০ দল। একইসঙ্গে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করা হয়।

ওই কর্মসূচি শেষের পর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন ২০ দলের মহাসচিবরা। এরপর সংবাদ সম্মেলনে হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, ওষুধ ও খাবারের দোকান, সংবাদপত্র ও মিডিয়ার যানবাহন হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের পরে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণার আগে এটা এই বছর ২০ দলীয় জোটের দ্বিতীয় হরতাল। সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে কয়েক মাস আগে সর্বশেষ হরতাল ডেকেছিল তারা।

গয়েশ্বরের পাশাপাশি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুস সালাম পিন্টু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের মুক্তিও দাবি করেছে ২০ দল।

গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশ পণ্ডের জন্য সরকারকে সরাসরি দায়ী করে ফখরুল বলেন, “একদিকে ছাত্রলীগকে দিয়ে খালেদা জিয়ার জনসভা বানচালে ১৪৪ ধারা জারি, অন্যদিকে আজ এই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ছাত্রলীগ পুলিশের সহায়তায় মিছিল করেছে। সরকারের এহেন দ্বৈতনীতির আমরা নিন্দা জানাই।”

গাজীপুরে শনিবারের হরতালের চিত্র

সারাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে ৫টি মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চক্রান্ত চলছে। একইভাবে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।

“কেবল তাই নয়, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক, হবিগঞ্জের মেয়র জি কে গউস, গাজীপুরের মেয়র এম এ মান্নান, রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ বিভিন্ন নির্বাচিত মেয়র ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।”

খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে গত ২৪ ডিসেম্বর বকশীবাজারের সংঘর্ষের জন্য বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দাও জানান  ফখরুল।

“কিভাবে ছাত্রলীগের পাণ্ডারা নিরীহ জনগণের ওপর হামলা চালিয়েছে, তা দেশবাসী দেখেছে।এখন উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপাতে আবদুল আউয়াল মিন্টু, হাবিবউন নবী খান সোহেল, আজিজুল বারী হেলাল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসানসহ শতাধিক নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

“সরকারের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে জোট এই কর্মসূচি (হরতাল) দিয়েছে,” বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাচিব।

ফখরুলের সভাপতিত্বে মহাসচিবদের বৈঠকে ছিলেন এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, খেলাফত মজলিশের আহমেদ আবদুল কাদের, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের ফজলুর রহমান, জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ন্যাপের গোলাম মোস্তফা ভুঁইয়া, লেবার পার্টির হামদুল্লাহ আল মেহেদি, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, এনপিপির মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জমিয়তে উলামা ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, ডিএল’র খোকন চন্দ্র দাস, বিজেপির সালাহউদ্দিন মতিন প্রভাষ, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম।