বিএনপি জোটে ভাঙন ধরিয়ে এনডিএফের যাত্রা শুরু

বিএনপি জোটের ভাঙ্গন ধরিয়ে আত্মপ্রকাশ করল ১০ দলের নতুন জোট ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-এনডিএফ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2014, 06:46 AM
Updated : 20 Oct 2014, 04:28 PM

২০ দলীয় জোট থেকে আগে বের হয়ে আসা এনপিপির শেখ শওকত হোসেন নীলু এই নতুন জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

গত কয়েক দিন ধরেই এ জোট গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চললেও বৃহস্পতিবার রাজধানীতে সংবাদ সম্মেলনে করে এনডিএফের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন নীলু।

তিনি বলেন, “আমি ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করছি।”

বক্তব্যের শুরুতে মাওলানা আবদুল হামিদ ভাসানীকে ‘মজলুম জননেতা’, শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘বঙ্গবন্ধু ও জাতির জনক’ এবং জিয়াউর রহমানকে ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি’ উল্লেখ করে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন নীলু।

জোটের মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপির মহাসচিব আলমগীর মজুমদার।

অনুষ্ঠানের মঞ্চের ব্যানারে লেখা ছিল- দেশ, জাতি ও জনগণের স্বার্থরক্ষা এবং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রয়োজনে এই জোট।

১০ দলের এই জোটে আছে- ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (শেখ শওকত হোসেন নীলু), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি (আলমগীর মজুমদার),  বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (জোবাইদা কাদের-আতিক), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (শেখ আনোয়ারুল হক), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল-জাগো দল (মালেক), লেবার পার্টি (সেকান্দর আলী),  বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি (আবদুর রশিদ প্রধান), ইনসাফ পার্টি (শহীদ চৌধুরী), তৃনমূল ন্যাপ ভাসানী এবং ভাসানী ফ্রন্ট (মমতাজ চৌধুরী)।

এর মধ্যে মুসলিম লীগ, এনডিপি, ইসলামিক পার্টি, লেবার পার্টি ২০ দলীয় জোটে রয়েছে। তবে দেখা গেছে, কেউ জোট থেকে বেরিয়ে গেলে আরেক নেতার নেতৃত্বে অন্য একটি অংশ ২০ দলে থেকে যাচ্ছে, যা এনপিপির ক্ষেত্রেও হয়েছে।

অবশ্য দুদিন আগেও বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া বলেছিলেন, “অনেকে বলেছে, জোট ভেঙে যাচ্ছে। আমি বলছি, এই জোট ভাঙবে না। এই জোট শক্তিশালী আছে, শক্তিশালী থাকবে।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওই সমাবেশে জোটের নেতাদের উদ্দেশ্যে খালেদা বলেছিলেন, “২০ দলীয় জোটের নেতারা দেশপ্রেমিক। তারা দালাল ও বেঈমানের সঙ্গে যেতে পারে না। আমি মনে করি, এই দুর্দিনে দেশকে বাঁচাতে জোটের নেতাদের আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

শেখ শওকত হোসেন নীলু নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে (এনপিপি) গত অগাস্টে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চেয়ারম্যান নীলুর বক্তব্যের পর এনডিএফের মহাসচিব আলমগীর মজুমদার জোটের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা চারদলীয় জোট কলেবরে বেড়ে ১৮ দলীয় যে জোট হয়, সেই অনুষ্ঠানও এই মিলনায়তনে হয়। ওইদিন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াও অনুষ্ঠানে ছিলেন।

বিএনপি ছাড়া সে সময় জোটের বাকি শরিকরা ছিল জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাপ ভাসানী,  মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, পিপলস লীগ ও ডেমোক্রেটিক লীগ।

পরে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দল এই জোটে যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর গত অগাস্টে জোট থেকে বহিষ্কার করা হয় শেখ শওকত হোসেন নীলু নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে (এনপিপি)।  তার আগে শেখ আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন ন্যাপ ভাসানীও জোট থেকে বেরিয়ে যায়।

এনডিএফের সংবাদ সম্মেলনে মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জোবাইদা কাদের চৌধুরী, মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান শেখ আনোয়ারুল হক, মহাসচিব হাসরাত খান ভাসানী, জাগো দলের চেয়ারম্যান আবদু মালেক চৌধুরী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী মনি, মহাসচিব আখতার হোসেন, ইসলামিক পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এম এ রশীদ প্রধান, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এনায়েত হোসেন, এনডিপির চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার, মহাসচিব আলী নুর মোহাম্মদ খান সাজু, এনপিপির মহাসচিব  আবদুল হাই মণ্ডল, ভাসানী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মমতাজ চৌধুরী, ইসলামিক পার্টির আবদুর রশীদ প্রধান, লেবার পার্টি ইনসাফ পার্টির শহীদ চৌধুরী, জাগো দলের আবদুল মালেক চৌধুরী, মহাসচিব মিজানুর রহমান, তৃণমূল ন্যাপের চেয়ারম্যান পারভিন নাসের সুলতানা, সদস্য সচিব পরশ ভাসানী, ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান শহীদ চৌধুরী, মহাসচিব মো. মহিউদ্দিনসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।