“বিএনপি আর জামায়াত সব ধরনের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিত। অন্যদের মতামতকে গুরুত্ব দেয়া তো দূরের কথা, নেয়াই হত না,” বলেছেন তিনি।
গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের রোষের মুখে পড়ে বহিষ্কৃত হন নীলু। ওই ইফতারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও আমন্ত্রণ ছিল, তবে তিনি যাননি।
দুই বছর আগে সরকারবিরোধী আন্দোলনের চারদলীয় জোট সম্প্রসারিত করে ১৮ দলীয় জোট গঠন করা হলে তাতে যোগ হয় গোপালগঞ্জের নীলুর দল এনপিপি।
এখন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে এনপিপির একটি অংশ থাকলেও আরেকটি অংশ নিয়ে চলছেন নীলু। ওই দলে সোমবার যোগ দেন জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) অংশের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মনিরা বেগম।
জোটে জামায়াতে ইসলামী অনেক সময় বিএনপির ওপরও কর্তৃত্ব করছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, “উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত ১২৮টা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছে। বিএনপির অনেক অনুরোধ তারা আমলেই নেয়নি। এখন জামায়াত নিজেদের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল বলেও দাবি করছে।”
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনও জামায়াতের কারণে সফল হয়নি বলে ইঙ্গিত করেন ওই জোটের সাবেক এই নেতা।
“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গত ২৯ ডিসেম্বর কোথায় ছিলেন? সে সময়ে তার টেলিফোনের কললিস্ট দেখলে বের হয়ে আসবে কাকে কারা ফোন করে বলেছিলেন- বেগম জিয়ার ডাকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার দরকার নেই।”
খালেদা জিয়াকে জনবিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা চলছে বলেও নীলুর ধারণা।
তার বিরুদ্ধে জোটের ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তো ঈদে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এটা তো রাজনৈতিক শিষ্টাচার।
“অথচ আমরা প্রধানমন্ত্রীর ইফতারের অনুষ্ঠানে শামিল হলে জোট থেকে বহিষ্কার হই। কেন? আমাদের তো কেউ বলে দেননি যে প্রধানমন্ত্রীর ইফতারের দাওয়াতে যাওয়া যাবে না।”
বিএনপি জোট থেকে বহিষ্কৃত হলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন এনপিপি চেয়ারম্যান।
যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যারা একাত্তরে মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে অবশ্যই বিচার করা দরকার। তবে বিচারের নামে প্রহসন করা হলে তা দুঃখজনক হবে।”
যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষেও অবস্থান জানান জামায়াতের সঙ্গে কিছুদিন আগেও জোটে থাকা এই রাজনৈতিক নেতা।
“আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন করেছি, কাদের মোল্লাও ছাত্র ইউনিয়ন করেছে। সেসময় ১৮ বছরের একটা ছেলে পুরো মিরপুরে মানবতাবিরোধী কাজ করেছে, অন্যরা তা মুখ বুঁজে মেনে নিয়েছে। এটা কি বিশ্বাস করা যায়, বলেন?”
পাকিস্তানের ইয়াহিয়া খান, টিক্কা খানের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হল না- প্রশ্ন তুলে নীলু বলেন, “যারা মানবতাবিরোধী কাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তাদের বিচার না করে আপনি সহযোগীদের বিচার করতে চাইছেন। এটা কেমন কথা?”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পক্ষ ও বিপক্ষ বলে কোনো কথা নেই। এটা প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে ব্যবহার হওয়া রাজনৈতিক শব্দ।”