জোট ভাঙবে না: খালেদা

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট থেকে কয়েকটি দলের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই খালেদা জিয়া বলেছেন, তার জোট ভাঙবে না।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2014, 03:45 PM
Updated : 23 Sept 2014, 03:55 PM

মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ২০ দলীয় জোটের জনসভায় তিনি বলেন, “অনেকে বলেছে, জোট ভেঙে যাচ্ছে। আমি বলছি, এই জোট ভাঙবে না। এই জোট শক্তিশালী আছে, শক্তিশালী থাকবে।”

খালেদার এই জনসভার দিনই শেখ শওকত হোসেন নীলু নেতৃত্বে ২০ দলের কয়েকটি দলের নেতারা বৈঠক করে নতুন জোটের রূপরেখা এবং কর্মসূচি ঠিক করেন।

২০ দলীয় জোটের সাবেক এই নেতার নেতৃত্বেই বৃহস্পতিবার ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট- এনডিএফ নামের নতুন এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

খালেদা জিয়া সমাবেশে বলেন, “২০ দলীয় জোটের নেতারা দেশপ্রেমিক। তারা দালাল ও বেঈমানের সঙ্গে যেতে পারে না। আমি মনে করি, এই দুর্দিনে দেশকে বাঁচাতে জোটের নেতাদের আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা চারদলীয় জোট কলেবরে বেড়ে ১৮ দলীয় জোট হয়।

বিএনপি ছাড়া সে সময় জোটের বাকি শরিকরা ছিল জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাপ, ন্যাপ ভাসানী,  মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, পিপলস লীগ ও ডেমোক্রেটিক লীগ।

পরে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও সাম্যবাদী দল এই জোটে যোগ দিলে তা ২০ দলীয় জোটে পরিণত হয়।

প্রধানমন্ত্রীর ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর গত অগাস্টে জোট থেকে বহিষ্কার করা হয় শেখ শওকত হোসেন নীলু নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল পিপলস পার্টিকে (এনপিপি)।  তার আগে শেখ আনোয়ারুল হক নেতৃত্বাধীন ন্যাপ ভাসানীও জোট থেকে বেরিয়ে যায়।

নতুন জোটের প্রক্রিয়ার কথা জানিয়ে নীলু মঙ্গলবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে। ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে তা জানিয়ে দেব।”

এনপিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আব্দুল হাই মণ্ডল বলেন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (আনোয়ারুল হক), মুসলিম লীগ (জোবাইদা কাদের-আতিক), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি (আলমগীর মজুমদার), ভাসানী মঞ্চ (মমতাজ চৌধুরী), বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি (আবদুর রশিদ প্রধান), লেবার পার্টি (সেকান্দর আলী), ইনসাফ পার্টিকে (শহীদ চৌধুরী) থাকছে তাদের নতুন জোট এনডিএফ-এ।

১৯৮৬ সালের স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদের ‘পাতানো’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণের কথা মনে করিয়ে দিয়ে খালেদা জিয়া সমাবেশে বলেন, “শেখ হাসিনা সম্প্রতি বলেছেন, তার দলের সবাই বিক্রি হয়ে যায়। তিনি বিক্রি হন না।

“তাকে জিজ্ঞাসা করেন, এরশাদের কাছ থেকে তিনি (শেখ হাসিনা) কত টাকায় বিক্রি হয়েছেন। চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে তিনি বলেছিলেন, যে এরশাদের সঙ্গে নির্বাচনে যাবে- সে জাতীয় বেঈমান হবে। দেখা গেল চট্টগ্রাম থেকে তিনি ঢাকায় ফিরে এসে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে নিজেই জাতীয় বেঈমান হলেন।”

খালেদা জিয়া বলেন, জামায়াতে ইসলামী এখন বিএনপির সঙ্গে আছে বলেই সরকার তাদের ‘ভয় দেখায়’।

“তাদের স্বাধীনতাবিরোধী, জঙ্গি অমুক-তুমক বলা হয়।”

১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, “যখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত ছিল, তখন তারা খারাপ ছিল না, স্বাধীনতাবিরোধী ছিল না। তখন তারা স্বাধীনতার সপক্ষে ছিল।”