সরকারি দলের নেতাদের মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল না হলেও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের এই পদক্ষেপ নেয়াকে ‘রহস্যজনক’ মনে হচ্ছে বিএনপির কাছে।
Published : 21 Jan 2014, 07:04 PM
খালেদা জিয়ার ছেলের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি ভিন্ন আচরণ করছে দাবি করে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপি।
নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, “দেশবাসী জানেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা কিভাবে প্রত্যাহার হয়েছে এবং কিভাবে তারা অভিযোগ মুক্ত হয়েছেন।
“ওইসব মামলায় অভিযুক্তরা খালাস পেলেও পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে কমিশন আর কোনো আপিল করেনি। আমরা মনে করি, তারেক রহমানের খালাসপ্রাপ্ত মামলায় রহস্যজনকভাবে দুদক এই আপিল করেছে।”
অর্থ পাচারের একটি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে হাই কোর্ট যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেককে আদালত আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিবিহীন ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিপন দশম সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় পার্টির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
নির্বাচনপূর্ব জাতীয় পার্টির বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংসদ জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল করার এই প্রক্রিয়াটি অনৈতিক ও অবৈধ বলে আমরা মনে করি। এর মাধ্যমে সরকারের কপালে আরেক কলঙ্কের তিলক লেপন হল।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদুজ্জামান, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, আসাদুল করীম শাহিন ও যুবদলের সহসভাপতি মোরতাজুল করীম বাদরু উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা
সাতক্ষীরার জনসভায় শেখ হাসিনার বক্তব্যের জবাবে রিপন বলেন,“প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আগামী ৫ বছর ভুলের খেসারত দিতে হবে। তার এই বক্তব্য প্রমাণ করে তিনি অনির্বাচিত সঙদের নিয়েই চলতে চান।
“যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে যায়নি সেই নির্বাচনে গঠিত সরকার আর যাই হোক, তা কোনক্রমেই জনগণের সরকার হতে পারে না। এজন্য ভবিষ্যতে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ভাবে খেসারত দিতে হবে।”
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা আশা করব, সরকার প্রতিহিংসার নীতি থেকে সরে আসবেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার অগণতান্ত্রিক খেলা বন্ধ করে সকল সাংবিধানিক বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনভাবে চলার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না।”
ইনুর সমালোচনা
সাতক্ষীরায় যৌথঅভিযান নিয়ে খালেদা জিয়াকে মাফ চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের জবাবে রিপন বলেন, “অবস্থাটা এমন যে ভুতের মুখে রাম নাম।”
“১৯৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর আমাদের সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য এই ইনু সাহেবরাই দায়ী ছিলেন। ওই সময়ে ইনু সাহেবকে বন্দি করা হয়েছিল।”
“প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে মাফ করে দিয়েছিলেন। আজ আমাদের সেনাবাহিনীর বিষয়ে ইনু সাহেব মায়াকান্না করছেন!”
জাসদ সভাপতি ইনু মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,সাতক্ষীরায় অভিযান নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের বক্তব্য সেনাবাহিনীর জন্যও অপমানজনক। এজন্য তাকে জনগণের কাছে মাফ চাইতে হবে।
রিপন বলেন, “তৎকালীন জাসদ, গণবাহিনী ও সৈনিক সংস্থার কর্মকাণ্ড ও ভূমিকা দেশের মানুষের জানা আছে।”