হাওরাঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি খালেদার

অকাল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরাঞ্চলকে আগামী ছয় মাসের জন্য ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 April 2017, 06:59 PM
Updated : 30 April 2017, 06:59 PM

রোববার এক বিবৃতিতে তিনি সরকারের প্রতি এই দাবি জানানোর পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সামর্থ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাওরাঞ্চল সফরের দিন দেওয়া এই বিবৃতিতে খালেদা বলেন, “যেভাবেই থাকুন না কেন, তিনি এখন ক্ষমতার চেয়ারে আসীন। সেই হিসেবে দুর্যোগ মোকাবেলার প্রধান দায়িত্ব মূলত তারই।

“এই ধারণা থেকে আমাদেরও আশা ছিল, হাওর এলাকা পরিদর্শন শেষে তিনি হয়ত ওই এলাকাকে দুর্গত অঞ্চল ঘোষণা করবেন। দুঃখের বিষয়, সে আশা পূরণ হয়নি।”

প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতির ভয়াবহতা হয় উপলব্ধি করেননি অথবা স্বীকার করতে চাননি বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

হাওরে বিপর্যয় নিয়ে সরকারি তৎপরতায় সমালোচনামুখর বিএনপির চেয়ারপারসনকে বক্তৃতা না দিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করতে আওয়ামী লীগ নেতাদের আহ্বানের মধ্যে খালেদার এই বিবৃতি এল।

তিনি হাওর অঞ্চলে নতুন ফসল না আসা পর্য্ন্ত ক্ষতিগ্রস্তদের খাদ্য সহায়তা দেওয়া, সরকারি কৃষি ঋণের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ, সরকারি-বেসরকারি সব প্রকার ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত, কৃষকদের ক্ষতিপুরণ ও বিনাসুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ দেওয়া, এক বছরের জন্য জলমহালের ইজারা বাতিল করে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহের সুযোগ স্থানীয় দরিদ্রদের দেওয়ার দাবি জানান।

“আমরা অনতিবিলম্বে এসবের প্রতিকার দাবি করছি। মানুষের দুর্গতি নিয়ে কোনো রকমের রাজনীতি না করার আহ্বান জানাচ্ছি,” বলেন তিনি।

খালেদা বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি যে, প্রতিবেশী দেশের সীমান্তবর্তী খনি থেকে ইউরেনিয়াম মিশ্রিত পানি দুষণে জলজ প্রাণীর মৃত্যুর ব্যাপারে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবর খণ্ডন করাই এক সময় ক্ষমতাসীনদের কাছে ত্রাণ তৎপরতার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

“এ নিয়ে তারা মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠে মর্মে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়, তাতেও আমরা দেশবাসীর সঙ্গে সমভাবে ব্যথিত হয়েছি।”

উজান থেকে আসা পানিতে হাওরে অকাল বন্যার আগাম তথ্য না পাওয়ার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেন খালেদা।

“প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ সম্পর্ক স্থাপনের কথা প্রচার করা হয়। তা সত্ত্বেও পাহাড়ি ঢলের তথ্য যথাসময়ে কেন পাওয়া গেল না এবং সে অনুযায়ী হাওরবাসী ও সরকারি প্রশাসনকে কেন আগাম সর্তক ও প্রস্তত করা হল না, সে প্রশ্ন আজ সঙ্গতভাবেই উঠেছে।”

হাওর অঞ্চল তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়ার পরপরই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথাও বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।