২০১১ সালের নির্বাচনের আগের রাতে দলের সিদ্ধান্তে ভোট বর্জন করার যন্ত্রণা ভুলতে পারছেন না বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা।
আগামী ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ২৪ নভেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। শুক্রবারই বর্তমান মেয়র সেলিনা হায়াত আইভীকে মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বিএনপিও কার্যক্রম শুরু করেছে। এদিন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তৈমুরসহ নারায়ণগঞ্জের বেশ কয়েকজন নেতার।
নারায়ণগঞ্জে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা শিগগির এ নির্বাচনের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করব। গতবার যেহেতু তৈমুর আলম খন্দকার করেছেন, সেহেতু তিনি অগ্রাধিকার পাবেন।”
মনোনয়নপত্র জমা দিতে আরও ছয় দিন থাকায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে পর্যালোচনা চলছে বলে জানান তিনি।
নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ম্যাডামের ইচ্ছা আমি যেন প্রার্থী হই। আমি পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেছি-এবার ক্ষমা চাই। নির্বাচন করতে চাই না আমি। দল যাকে দেবে তার পক্ষে আমি কাজ করব।”
এবার প্রার্থী হতে অনাগ্রহের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের বার ভোটের আগের রাতে বাধ্য হয়ে তাকে নির্বাচন বর্জন করতে হয়েছে।
“আমি জানি না আমি ভোটে নেই, সবাই জানে ভোট বর্জন করেছি। এটা কীভাবে হয়? এরকম আর হোক তা চাই না। এবার বলেছি- নির্বাচন করব না। তবে ম্যাডামের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”
শেষ পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্ব তাকে মনোনয়ন দিলে প্রত্যাখ্যান করবেন কি না সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানান তৈমুর।
তিনি বলেন, “অন্য কেউ প্রার্থী আছেন কি না আমার জানা নেই। কেউ থাকলে তো নাম জেনেই যেতেন। এখন ম্যাডাম যে সিদ্ধান্ত দেবেন তার পক্ষে আমি কাজ করব। যে নাম ঘোষণা করবেন তা আপনাদের জানাব।”
২০১১ সালের নির্দলীয় ওই ভোটে আওয়ামী লীগের দুই নেতা এ কে এম শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াত আইভী মেয়র পদে লড়েছিলেন। বিএনপি থেকে একক প্রার্থী তৈমুর আগের রাতে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়ার পরও সাড়ে সাত হাজার ভোট পেয়েছিলেন। ভোটে বিজয়ী হয়েছিলেন আইভী।
পরে তৈমুর বলেছিলেন, “নেত্রীর নির্দেশে আমি নিজেকে কোরবান দিয়েছি।”
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নারায়ণগঞ্জের সাত থেকে আটজন নেতা বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে বসেছিলেন। তিনি নিজেও প্রার্থী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে মনোনয়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।