কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে নিহতদের জন্য বিএনপি নেতাদের মনে ‘দরদ ও ব্যথা’ তৈরি হয়েছে মন্তব্য করে তার কারণ জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 28 Jul 2016, 12:33 AM
বুধবার সংসদের একাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ প্রশ্ন করেন তিনি।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা শাহ মোয়াজ্জেম ও হান্নান শাহর বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেছেন যে, পুলিশ অভিযান চালিয়ে যে নয়জনকে হত্যা করেছে তারা জঙ্গি কি না সন্দেহ আছে।
“আরেকজন বলেছেন, নিহতরা জঙ্গি কি না তা নিয়ে সন্দেহের কারণ রয়েছে। সেখানে গুলশানের ঘটনার সঙ্গে কল্যাণপুরের ঘটনার তুলনা করলেন। কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ কিন্তু এই দুই ঘটনাকে তুলনা করতে পারে না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার প্রশ্ন বিএনপি নেতাদের এই আহাজারি কেন? জঙ্গিদের জন্য তাদের এত দরদটা কিসের? তাদের মনে এই সন্দেহ কেন যে জঙ্গি কি না?
“তাদের মনে সন্দেহ কেন এটা একটা সন্দেহের ব্যাপার। তাদের কোথায় ঘা লাগল? কোথায় ব্যথা পেলেন তারা? তাহলে তাদের উদ্দেশ্যটা কী? জঙ্গিদের সাথে যোগনসূত্র কোথায়? এই প্রশ্নটা আমি জাতির কাছে রেখে গেলাম যে, তারাই এটা খুঁজে বের করবে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা জঙ্গি দমনে যখন চেষ্টা করছি, সেখানে তারা প্রশ্ন তুলে পুলিশের কার্যক্রমকে জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়- এর থেকে দুঃখের আর কিছু নেই।
“পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে হামলা হয়েছে, কেউ কিন্তু জঙ্গিদের তুলে এনে কোলে করে আদর করে পালা-পোষা করে নাই। অন দ্য স্পট তাদের মেরে ফেলেছে।”
ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্ত্রাসী নিহত হওয়ার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সাথে সাথে কিন্তু তাদেরকে মেরে ফেলেছে। তারা এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে বা হত্যা করে ফেলা হয়েছে।
“জঙ্গি মোকাবিলা করতে গেলে, দমন করতে গেলে এটাই নিয়ম। কিন্তু বিএনপির নেতাদের এত কষ্ট কেন? তাদের দরদটা কেন? সেটাই আমার প্রশ্ন।
“এদের সাথে কোন গোপন সূত্র আছে কি না বা কোনো ষড়যন্ত্রে এরা লিপ্ত কি না সেটাই দেখতে হবে।”
জঙ্গিবাদ প্রশ্নে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইনশায়াল্লাহ, সবাই মিলে আমরা জঙ্গি দমন করতে পারব- এ আমার বিশ্বাস।”
হরতাল-অবরোধের নামে ‘মানুষ পুড়িয়ে জনগণের প্রতিরোধে পড়ার কারণে’ গুপ্তহত্যার পথ বেছে নেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “প্রকাশ্য আগুন দিয়ে মানুষ যখন পোড়াল, দেখল জনগণই প্রতিরোধ গড়ে তুলছে। তখন ভিন্ন পথ নিল। গুপ্তহত্যা শুরু। এবং যখন যেখানে যেটা ধরা পড়ছে, তদন্ত করে ওই গোড়াটা এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে।
“এগুলি যখন সময় আসবে ঠিকই আরও প্রকাশ হবে।”