দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ তুলেন।
তিনি বলেন, “একদিকে অসংখ্য চিহ্নিত হত্যাকারী ক্ষমতাসীন দলের লোক হওয়ার কারণে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা লাভ করছে। অন্যদিকে বিএনপিসহ বিরোধী দলের লোকদের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে।
“হায় কী সেলুকাস! কী বিচিত্র এই দেশ! এভাবে দেশে আইনের দুইরকম প্রয়োগ চলছে।”
আদালতে দণ্ডিত কাউকে ক্ষমা করার অধিকার সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে দিয়েছে। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের উভয় দলের শাসনামলেই এর প্রয়োগ দেখা যায়।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বিগত মহাজোট সরকার আমলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পেয়েছেন মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ২৬ জন, যাদের মধ্যে বহুল আলোচিত নুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি এ এইচ এম বিপ্লবও রয়েছেন।
মহাজোট আমলে ক্ষমা পাওয়াদের মধ্যে লক্ষ্মীপুরের আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহেরের ছেলে বিপ্লবের মৃত্যুদণ্ড মওকুফ নিয়ে আওয়ামী লীগকে ব্যাপক সমালোচনায় পড়তে হয়।
লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামকে হত্যার পর তার লাশ টুকরা টুকরা করে মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়া হয়েছিল। ওই মামলায় বিপ্লবকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল বিচারিক আদালত।
অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত জোট ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারে শাসনামল মিলিয়ে আট বছরে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা পান চারজন, যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত মহিউদ্দিন ঝিন্টুর নাম ব্যাপক আলোচিত।
শুক্রবার সকালে সকালে নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহীর তানোর পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমানের গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করেন রিজভী।
ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগে তানোর উপজেলা যুবদলের সভাপতি মিজানকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ঈদের আগে ভীতি ছড়িয়ে সরকারি দলের ‘ক্যাডাররা’ সারা দেশে ‘চাঁদাবাজি’ করছে বলে সাংবাদিকদের সামনে অভিযোগ করেন রিজভী।
“অফিস-আদালত-দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বত্র আওয়ামী চাঁদাবাজিতে দেশবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জবরদস্তিমূলক সরকার রক্তপিপাসু জীব হয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের ড্রাইভিং সিটে বসে।”
দেশের জনগণ ‘অবৈধ সরকারের’ দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে দাবি করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “সেজন্য ক্ষমতা জোর করে টিকিয়ে রাখতে ভারতের সমর্থন পাওয়ার জন্য তাদের কাছে দেশকে ক্রমান্বয়ে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিতে একের পর এক পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করা হচ্ছে।
“বাংলাদেশে দুঃশাসনের রথচক্র অব্যাহত গতিতে চালানোর জন্য একমাত্র ভারতের সাথেই ‘প্যাকেজ প্রোগ্রাম’ই হচ্ছে শেখ হাসিনা সরকারের টিকে থাকার নিশ্চয়তা।”
সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু উপস্থিত ছিলেন।