বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে হাই কোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
Published : 25 May 2016, 03:32 PM
বুধবার এই রায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দিন আটকে থাকা এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম আবার শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুদক কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “অপরাধের প্রাথমিক সতত্যা রয়েছে। তাই ওই আবেদন চলে না বলে হাই কোর্ট খালেদার আবেদন খারিজ করে দেয়। ২৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি হাতে পেয়েছি। এতে বিচারিক আদালতকে দ্রুত মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।”
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালতে অভিযোগ গঠন পর্যায়ে রয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়া নিম্ন আদালত থেকে আগেই ওই মামলায় জামিন পেয়েছিলেন এবং এখনও তা বহাল আছে।
“তাই হাই কোর্টের রায়ে আত্মসমর্পণের কোনো নির্দেশনা আসেনি। হাই কোর্টের রায়ের অনুলিপি পেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।”
বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে রায় দেয়। পাশাপাশি ওই মামলার ওপর এর আগে দেওয়া স্থগিতাদেশও তুলে নেওয়া হয়।
জরুরি অবস্থার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের করা এ মামলা বাতিলের জন্য খালেদার আবেদনে সাত বছর আগে হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। সেই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হওয়ায় মামলা চলার আইনি বাধা কাটে।
এর আগে গ্যাটকো ও নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনও হাই কোর্টে খারিজ হয়ে যায়। ওই দুটি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয় মামলায়।
খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।
সাত বছর পর ২০১৫ সালের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে গত ১৭ সেপ্টেম্বর রায় দেয় হাই কোর্ট।