আইনি লড়াই নিষ্পত্তি শেষে যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তার প্রতিবাদে হরতালের কর্মসূচি দিয়েছে তার দল জামায়াতে ইসলামী।
Published : 11 May 2016, 02:12 AM
বুধবার প্রথম প্রহরে জামায়াত আমিরকে ফাঁসিতে ঝোলানোর পর দলটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিন দিনের কর্মসূচির ঘোষণা আসে, যার মধ্যে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী হরতালও রয়েছে।
জামায়াতের হরতালের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার কারাফটকে সাংবাদিকদের বলেন, “তারা যেন হরতালে কোনো নাশকতা না চালাতে পরে, নাগরিকদের জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটাতে না পারে, সেজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।”
পুলিশ কর্মকর্তা মারুফ এই বক্তব্য দেওয়ার কয়েক মিনিট আগেই নিজামীর লাশ নিয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয় অ্যাম্বুলেন্স। জামায়াত আমিরকে পাবনার সাঁথিয়ায় তার গ্রামে দাফন করা হবে।
বিবৃতিতে জামায়াত বুধবার নিজামীর জন্য গায়েবানা জানাজা এবং শুক্রবার দেশব্যাপী দোয়া পালনের কর্মসূচিও দিয়েছে।
একাত্তরে আলবদর নেতা নিজামী দেড় দশক ধরে জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দলটির তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের প্রধান নিজামী আল বদর কমান্ডার হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের হোতা ছিলেন বলে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে এসেছে।
ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে নিজামী আপিল করলে সেই আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগ। তারপর তিনি রিভিউ আবেদন করেন। তা খারিজের পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ দলের আমির নিজামীকে ‘দেশপ্রেমিক ও দক্ষ জাতীয় নেতা’ অভিহিত করে বলেন, ‘ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয়’ এই নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ‘হত্যা করায়’ জাতি গভীরভাবে ‘শোকাহত ও সংক্ষুব্ধ’।
“সরকার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে হত্যা করে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে, তা বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।”
একাত্তরে ভূমিকার আদালতের রায়ে ‘ক্রিমিনাল দল’ হিসেবে চিহ্নিত জামায়াতের নেতা নিজামী বাঙালি জাতিকে সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে তরুণদের উসকে দিতে সচেতনভাবে ইসলাম ধর্মের অপব্যবহার করেছিলেন বলে উঠে আসে আদালতের পর্যবেক্ষণে।
নিজামী ‘ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত’ হয়েছেন দাবি করে মকবুল বলেন, তার দলের আমির ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার’।