বুধবার রাজধানীতে ১৪ দলের বৈঠকের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের আচরণ শিষ্টাচার বহির্ভূত।
“আর বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের নিয়ে একের পর এক আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে পাকিস্তানকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তিনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রে সহযোগিতা করছেন।”
গত বছর যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে পাকিস্তান উদ্বেগ প্রকাশ করায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে একাত্তরে বাংলাদেশে গণহত্যার দায় অস্বীকার করে স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজিত এই দেশ।
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের টানা পোড়েনের মধ্যেই গত বছরের ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে ‘সংশয়’ প্রকাশ করে করেন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও সরকারের মন্ত্রীরা বিএনপি নেত্রীর এ বক্তব্যের সমালোচনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পাকিস্তান সরকার ও খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যের প্রতিবাদে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন উপলক্ষে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে ১৪ দলের ওই বৈঠক হয়।
এর আগে আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, “পাকিস্তানের আচরণে জনগণ ক্ষুব্ধ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের এমন হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
“পাকিস্তানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বিএনপি নেত্রীও মুক্তযুদ্ধকে অবমাননা করে নানা বক্তব্য রাখছেন, যা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্রে সহযোগিতা করছে।”
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু বাংলাদেশ বিষয়ে পাকিস্তান সকল সীমা অতিক্রম করছে।”
“পাকিস্তান এখন সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য। জঙ্গি আর সন্ত্রাসের কারণে পাকিস্তানের নিজ দেশের মানুষেরাও ক্ষুব্ধ। পাকিস্তান সরকার সে দেশের জনগণের দৃষ্টি অন্য দিকে ফেরাতেই অনৈতিকভাবে বাংলাদেশের বিষয়ে কথা বলছে।”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনি সম্পাদক খালিম মাহমুদ চৌধুরী, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহম্মেদ হোসেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ মজুমদার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।