শনিবার সকালে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’ সংগঠনটির শতাধিক নেতা-কর্মী গুলশানে জড়ো হলে সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
পরে বনানী মাঠে জড়ো হয়ে তারা দুপুরে মিছিল নিয়ে এগোতে চাইলে তাও পুলিশ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়।
তখন বনানী মাঠে সমাবেশ করে কর্মসূচির ইতি টানে ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’, এতে সাংসদ মাহজাবিন খালেদ, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজও বক্তব্য রাখেন।
“বাংলাদেশে রাজাকারদের কোনো জায়গা নেই, খালেদা জিয়ার কোনো জায়গা নেই।
“মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা যতোদিন বেঁচে থাকবে আর মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যতোদিন থাকবে ততোদিন আমরা বাংলাদেশকে পাকিস্তান হতে দেব না।
সমাবেশে তুরিন বলেন, “মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের অপরাধ কম হয়েছিল এটা বিএনপি নেত্রী প্রমাণ করতে চাচ্ছেন। তাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন।
“তিনি (খালেদা জিয়া) মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা কমাতে পারলে বুঝি পাকিস্তানের অপরাধ কমে যাবে।”
সমাবেশে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এ আরাফাত বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া পাকিস্তানের সাথে সুর মিলিয়ে কথা বলছেন। তার বাংলাদেশে থাকার কোনো অধিকার নাই। এই নেত্রীকে উৎখাত করতে পারলে দেশে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।”
খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান বাংলাদেশে ‘পাকিস্তানপন্থি’ রাজনীতি চালাচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শহীদ আলীম চৌধুরীর মেয়ে নুজহাত চৌধুরী বলেন, “মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক করবেন আর স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ বসে থাকবে, তা হবে না। এমন আইন চাই, রক্ত দিয়ে যে স্বাধীনতা অর্জন সেটা নিয়ে কেউ কথা বলতে পারবে না।”
মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে সাম্প্রতিক বক্তব্যের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে নানা কর্মসূচি পালন করছে সরকার সমর্থক সংগঠনগুলো।
এর ধারাবাহিকতায় শনিবার খালেদার বাড়ি ঘেরাও কর্মসূচি দেয় ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’।
সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা সকাল ৯টায় গুলশান ২ নম্বর চত্বরে জড়ো হলে সেখানে কর্তব্যরত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আব্দুল আহাদ গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
কূটনৈতিক পাড়ায় এই ধরনের কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে তিনি তাদের সরে যেতে বলেন।
গুলশান দুই নম্বর চত্বরে জড়ো হতে না পেরে প্রতিবাদীরা পশ্চিম দিকে সরে এসে বনানী মাঠে অবস্থান নেয়।
এরপর সোয়া ১১টার দিকে বনানী মাঠ থেকে বেরিয়ে তারা খালেদা জিয়ার বাড়ির পথে মিছিল শুরু করলে পথে পুলিশ সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়।
এই বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “কূটনৈতিকপাড়ায় মিছিল, সভা-সমাবেশের মতো কোনো ধরনের কর্মসূচি পালনের বিধান নাই। তাই আমরা তাদের সাথে আলোচনা করে ওখানে করতে মানা করেছি।”
খালেদার গুলশান দুই নম্বর সেকশনের ৮৬ নম্বর সড়কের বাড়ি ঘেরাওয়ে এর আগেও সরকার সমর্থক সংগঠনগুলোর মিছিল আগেই আটকে দিয়েছিল পুলিশ।