বাংলাদেশের বর্তমান ‘সঙ্কটজনক’ অবস্থা থেকে উত্তরণে সরকার বিএনপির পরামর্শ মেনে জাতীয় সংলাপ ডাকবে বলে আশা করেছেন খালেদা জিয়া।
Published : 05 Nov 2015, 10:30 PM
লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি চেয়ারপারসন বৃহস্পতিবার দলের মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপনের স্বাক্ষরে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন,“ঘরে-বাইরে এখন কেউ নিরাপদ বোধ করছেন না। চারদিকে আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ। যেন সামনে ঘোর অন্ধকার।”
এই অবস্থায় সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে সম্প্রতি সরকারকে আহ্বান জানিয়েছিলেন খালেদা। ‘আন্তরিক’ সেই আহ্বানে সরকারের সাড়া না পেয়ে হতাশাও প্রকাশ করেন তিনি।
“আমরা আশা করব, সরকার শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে দেশের এই ক্রান্তিকাল ও সঙ্কটজনক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রকে সংকোচন না করে কর্তৃত্ববাদী মনোভাব থেকে সরে এসে একটি জাতীয় সংলাপের সূচনার পরিবেশকে উন্মুক্ত করবে,” বিবৃতিতে বলেন তিনি।
দুই বিদেশি খুন, শিয়াদের উপর বোমাবর্ষণ এবং প্রকাশক হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে এক কনস্টেবল খুনের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের এই আহ্বান এল।
বিদেশি খুনসহ দেশকে অস্থিতিশীল করার ‘পাঁয়তারা’র জন্য বিএনপিকে দায়ী করছে সরকার। এর প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতারা বলছেন, সরকার ‘গণতন্ত্রহীনতা’কে আড়াল করতে এই ‘অপপ্রচার’ চালাচ্ছে।
দেড় মাসের বেশি সময়ে ধরে লন্ডনে থাকা খালেদা জিয়া বিবৃতিতে বলেন, দেশের অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় করছে।
অসুস্থ অবস্থায় দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে কারাগারে পাঠানোর সমালোচনাও করেন তিনি।
“দলের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দকে এভাবে একের পর এক কারাবন্দি রাখার মধ্যে সরকারের দুরভিসন্ধি রয়েছে। আজ সরকার জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে তাদের অপশাসনকে প্রলম্বিত করার আকাঙ্ক্ষায় দেশে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।”
বর্তমান পরিস্থিতিকে বাংলাদেশের মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য ‘অশনি সঙ্কেত’ অভিহিত করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
“সরকার নিজেই এই সঙ্কট সৃষ্টি করেছে, যা ক্রমেই গভীর থেকে গভীরতর হয়ে পড়েছে। অবাধ, নিরপেক্ষ ও সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর থেকেই এই রাজনৈতিক সঙ্কটের সূচনা হয়েছে।”
‘সঙ্কট’ উত্তরণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনতিবিলম্বে একটি নির্বাচনের আয়োজন এখন জরুরি, বলেন খালেদা।
বিএনপিকে দেশে-বিদেশ একটি ‘সন্ত্রাসী দল’ বানাতে সরকারের ‘অপপ্রয়াসের’ সমালোচনাও করেন তিনি।
“তাদের এই প্রয়াস দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি এবং পাবে না। বরং তাদের ফ্যাসিবাদী চরিত্র আরও বেশি করে সকলের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।”
“বিএনপি একটি গণতন্ত্র পন্থার দল। আমরা কোনোভাবেই কোনো ধরনের উগ্রপন্থাকে সমর্থন করি না। সব ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট,” বলেন তিনি।