পদত্যাগ করলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী

ক্ষমতা গ্রহণের নয়মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি অলি।

>>রয়টার্স
Published : 25 July 2016, 07:55 AM
Updated : 25 July 2016, 07:55 AM

রোববার পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক মিনিট আগে পদত্যাগ করেন তিনি। ওই ভোটাভুটিতে তিনি হেরে যেতেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল।

গেল কয়েক বছর ধরেই নেপালের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থির হয়ে আছে। অলির পদত্যাগে দেশটির পুরো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ফের অনিশ্চয়তা তৈরি হল।

১৯৯০ সালে রাজতন্ত্রের পতনের পর দেশটি বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু তারপর থেকে  ২৬ বছরে এ নিয়ে ২৩টি সরকারের পতন ঘটল। 

গেল অক্টোবরে সাবেক মাওবাদীদের সমর্থন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার গঠন করেছিলেন অলি। কিন্তু ক্ষমতার অংশীদারিত্ব চুক্তির প্রতি প্রধানমন্ত্রী সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন অভিযোগ তুলে তারা অলির পাশ থেকে সরে যায়।

এরপর পার্লামেন্টে অলি বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব করে মাওবাদীরা।

রোববার সকালে রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি (আরপিপি) ও মাধেসি জনঅধিকার ফোরাম নেপাল (ডেমোক্রেটিক) ক্ষমতাসীন জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয়। এতে অনাস্থা ভোটে অলি হেরে যাবেন বলে ধারণা ছড়িয়ে পড়ে।

নেপালের দক্ষিণাংশের তরাই অঞ্চলের মাধেসিরা অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী অলি কথা দিয়ে কথা রাখেননি। অপরদিকে আরপিপি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘আত্মম্ভরিতার’ অভিযোগ এনেছিল।

রোববার বিকেলে নেপালি পার্লামেন্টের অধিবেশনে দেওয়া এক ভাষণে অলি বলেন, “পার্লামেন্টে আসার আগে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পদত্যাগপত্র দিয়ে এসেছি আমি।”

গেল সেপ্টেম্বরে প্রথম সংবিধান গৃহীত হওয়ার পর থেকে নেপালে নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্কটের সূচনা হয়।

দক্ষিণের সংখ্যালঘু মাধেসিরা সংবিধান প্রত্যাখ্যান করে অভিযোগ করে, তাদের এলাকা কয়েকটি ফেডারেল রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ায় তারা সেসব জায়গায় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে।

মাধেসিদের উদ্বেগ আমলে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অলি, পাশাপাশি গেল বছরের প্রলয়ঙ্করী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত নেপালিদের ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

অলির সমালোচকেরা বলছেন প্রতিশ্রুতি মতো কাজ করেননি তিনি। এরপর মে মাসে অলির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে মাওবাদীরা।

শুক্রবার পার্লামেন্টে মাওবাদীদের নেতা প্রচন্ড বলেন, “প্রধানমন্ত্রী অহংকারী ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছেন, কোনো কিছুই শুনতে চান না। এ কারণে তার সঙ্গে আর কাজ করে যেতে পারছি না আমরা।”

৬৪ বছর বয়সী অলির জায়গায় নেপালের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বিবেচনায় প্রচন্ডই এগিয়ে আছেন বলে জানা গেছে।