শুরু হয়েছে শীতের আনাগোনা। রাতে হালকা শিশিরে ভিজে যাচ্ছে পথঘাট। শহরে এখন ভোর আর রাতে দেখা যায় হালকা কুয়াশা। তাই শীতের উপযোগী পোশাক কিনতে শুরু করেছেন অনেকেই।
Published : 12 Nov 2013, 07:43 AM
ফ্যাশনপ্রেমীদের কাছে শীতকাল সব সময়ই একটি আকর্ষণীয় ঋতু। অবশ্য প্রয়োজনের তাগিদেও এ সময় নতুন গরম পোশাক কিনতে হয়। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। তাই পোশাকে লাগছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
হাল ফ্যাশনের শীত উপযোগী পোশাক সম্পর্কে দেশি প্রতিষ্ঠান চরকা’র কর্ণধার জাভেদ কামাল বলেন, “কিশোরী ও তরুণীরা ইদানীং জিন্স-টপসের মতো পশ্চিমা পোশাকগুলোর দিকে ঝুঁকছে। এ ছাড়া পোশাকের কাটিংয়ে এসেছে অনেক পরিবর্তন। শীতের জন্য এসেছে কোয়ার্টার কিংবা ফুলহাতা পোশাক।”
এই মৌসুমে দিনের বিভিন্ন সময়ে তাপমাত্রা বিভিন্ন রকম। দুপুরে গরম, সন্ধ্যায় শীতের আমেজ। এই দিকে খেয়াল রেখে মেয়েদের শাল বা চাদরেও এসেছে নতুনত্ব।
এই বিষয়ে জাভেদ বলেন, “মেয়েদের শালে এবারে আমরা কিছু হাতের কাজ করেছি। যেমন চুমকির কাজ, মেশিন এম্ব্রয়ডারি, প্যাচওয়ার্ক ও কাতানের পাড়ের ব্যবহার। এসব শাল একটু খাটো। তাই দিনে ওড়না আর সন্ধ্যার পর শাল হিসেবে ব্যবহার করা যায়।”
শীত মৌসুমের কথা মাথায় রেখে বার্ডস আই এনেছে ফুলহাতা টি-শার্ট, ফুলহাতা পোলো শার্ট, ম্যাগি হাতা ক্যাপ শার্ট, ফুলহাতা ক্যাপ, ফুলহাতা সোয়েটার, ফুলহাতা শার্ট ও বাচ্চাদের ক্যাপ। নিজস্ব ডিজাইনারদের নকশায় তৈরি এসব পোশাক শীতে পরার উপযোগী করে তৈরি। পাইকারি ও খুচরা পাওয়া যাচ্ছে ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেটে।
মুসলিম কালেকশন এই শীতে নিয়ে এসেছে নতুন ডিজাইনের বাহারি সব শার্ট। ক্যাজুয়াল, ফরমাল ও অফিসিয়াল শার্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে শতভাগ সুতি কাপড়।
পুরুষের শীত পোশাকের মধ্যে প্রথমেই ভাবনায় আসে সোয়েটার ও জ্যাকেট। এ ছাড়া কিছু কিছু পোশাকের সঙ্গে শীতের চাদরও বেশ মানিয়ে যায়।
তবে বর্তমান স্টাইলিশ শীত পোশাক হিসেবে জ্যাকেটের চলটাই সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে দেশীয় জ্যাকেটের পাশাপাশি দেখা মেলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি জ্যাকেট।
নিউমার্কেটের দক্ষিণ ভবনের দোতলা ও তিনতলায় রয়েছে ছেলেদের বিভিন্ন পোশাকে দোকান। সেখানে ঘুরে দেখা গেল জ্যাকেটের দাম ২ হাজার টাকা থেকে শুরু। মান ও কাপড়ের উপর দামের তারতম্য রয়েছে।
এই এলাকার ট্যানারি মোড়ের এসএ লেদার গুডসের বিক্রেতা নাসির বলেন, “আমাদের এখানে বিভিন্ন দামের চামড়ার জ্যাকেটের মূল্য সাড়ে ৬ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা।”
একটু কম দামেও জ্যাকেট তৈরি করেন তারা। তবে মান ভালো হয় না।
নাসিরের কথায়, “অর্ডার করলে সাড়ে ৫ হাজার টাকা দিয়েও চামড়ার জ্যাকেট তৈরি করে দিব। তবে সেগুলো ২ বছর পর শক্ত হয়ে যায়।”
বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেটের সঙ্গে পাল্ল দিয়ে বাড়ছে হুডির জনপ্রিয়তা। গেঞ্জি কাপড় কিংবা ট্রাউজারের কাপড়ের মতো উপকরণ দিয়ে তৈরি এই হুডিগুলো শরীরের শীত নিবারণের পাশাপাশি থাকে স্টাইলিশ হুড, যা শীত থেকে রক্ষা করে মাথা ও কান।
রাজধানীর বেশিরভাগ মার্কেটেই পাওয়া যায় এই হুডি। তবে কম দামে কিনতে চাইলে বঙ্গ বাজার ও ঢাকা কলেজের বিপরীতে মার্কেটগুলোতে ঢুঁ দেয়া যেতে পারে। দাম ২শ’ টাকা থেকে শুরু।
এছাড়া এক্সট্যাসি, ইনফিনিটি, মেনজ ক্লাব, ওয়েস্টেক্স- এর মতো দোকানগুলোতেও উঠতে শুরু করেছে শীতের হুডিসহ নানান ধরনের ছেলেদের গরম কাপড়।
পুরুষের স্টাইলিশ শীত পোশাক হিসেবে সোয়েটারের গুরুত্ব খানিকটা কম হলেও এর কদর এখনও কমেনি। তবে একেবারে বেসিক উল নিটেড সোয়েটারের চেয়ে মিক্স স্টাইলের সোয়েটারই বেশি চলছে।
শীতের সময় জ্যাকেট কিংবা সোয়েটারের সঙ্গে নানান স্টাইলের জিন্সের চলটাই সবচেয়ে বেশি। ক্যাজুয়াল পরিবেশে জ্যাকেট বা সোয়েটার পুরুষের সাজ পোশাকের সঙ্গে বেশ মানানসই।
মেয়েদের মধ্যেও রয়েছে জিন্সের চাহিদা। বঙ্গ ও নিউমার্কেট ঘুরে জানা গেল মেয়েদের একটু চাপা জিন্স আর ছেলেরা একটু ঢিলেঢালা জিন্সের দিকে ঝুঁকছেন। এসব জিন্সপ্যান্টের দাম ৯শ’ টাকা থেকে শুরু।
এছাড়া গ্রামীন-ইউনিক্লো (কাটাবন ও কাকলী শাখা), ওয়েস্টেক্স (এলিফ্যান্ট রোড ও বসুন্ধরা সিটি শাখা), বিগবস (ধানমণ্ডি ৩) এসব দোকানেও রয়েছে জিন্সের বাহারি সংগ্রহ।
ছবি সৌজন্যে : চরকা, গ্রামীন-ইউনিক্লো ও মেন্জ ক্লাব