চিনি খাওয়া কি জরুরি!

স্বাস্থ্য সচেতন হতে গিয়ে অনেকেই এখন চিনি বাদ দিচ্ছেন। মনে প্রশ্ন আসছে আসতে পারে, চিনি কি এতটাই ক্ষতিকর?

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2017, 10:53 AM
Updated : 7 June 2017, 10:53 AM

বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে খাদ্য ও পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিবেদনে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

আশ্চর্য শোনালেও সত্য যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও) প্রতিদিন ৬ থেকে ১২ টেবিল-চামচ পরিমাণ চিনি খাওয়ার পরামর্শ দেয়। যা বর্তমানে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের একেবারে উল্টো।

প্রথমেই জানতে হবে চিনির বিভিন্ন ধরণ সম্পর্কে। যেমন- কৃত্রিম চিনি, আখ থেকে তৈরি স্ফটিকীকরণ বা দানাদার চিনি এবং প্রাকৃতিক চিনি অর্থাৎ খাবার থেকে পাওয়া শর্করা।

আমাদের নিত্যভোজ্য চিনি হল দানাদার চিনি। দুধ, চা, কফি, শরবত, ডেজার্টজাতীয় খাবারে সাধারণত এই চিনি ব্যবহৃত হয়।

কৃত্রিম চিনি আমাদের কাছে ‘সুগার-ফ্রি’ চিনি হিসেবে পরিচিত।

আর সবজি, বীজজাতীয় খাবার, ফল ইত্যাদিতে থাকে প্রাকৃতিক চিনি বা শর্করা।

আখ থেকে তৈরি করা চিনি শরীরের জন্য সবচাইতে উপকারী। তবে প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবারে থাকা চিনি আসে প্রধানত উচ্চমাত্রায় ফ্রুক্টোজযুক্ত কর্ন সিরাপ থেকে, যা শরীরের জন্য সবচাইতে ক্ষতিকর।

ভারতীয় পুষ্টিবিদ শালিনি সিংহাল বলেন, “চিনি খাওয়া শরীরের জন্য জরুরি নয়। আমাদের শরীর চিনি থেকে গ্লুকোজ তৈরি করে- যা স্টার্চ, আমিষ ও চর্বি থেকেও পাওয়া সম্ভব। মনোযোগ দেওয়া উচিত আঁশে ভরপুর খাদ্যাভ্যাসে, যাতে আছে জটিল কার্বোহাইড্রেইট।”

ওজন কমাতে সহায়ক স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে চিনি বাদ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে এই পদ্ধতি আমাদের শরীরের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ গ্লুকোজ তৈরি করার জন্য শরীরে চিনি প্রয়োজন।

আরেক ভারতীয় পুষ্টিবিদ রাজুতা দিওয়াকার তার ব্লগের মাধ্যমে জানিয়েছেন, কীভাবে প্রক্রিয়াজাত শরবত ও দই খাওয়ার কারণে নিজের অজান্তেই আমরা চিনি গ্রহণ করি।

তার মতে, চিনি ক্ষতিকর নয়। তবে কয়েক বছর ধরে চিনি গ্রহণ করার পদ্ধতিগুলোতে যে পরিবর্তন এসেছে সেগুলো ক্ষতিকর।

চর্বি নাকি চিনি- কোনটা বেশি ক্ষতিকর? এই বিতর্কে পুষ্টিবিদরা চিনিকেই সবচাইতে ক্ষতিকর হিসেবে তুলে ধরেন।

তাদের যুক্তি, উচ্চহারের বিপাকক্রিয়ার মাধ্যমে চর্বি পোড়ানো সম্ভব। তবে চিনির ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন। 

স্থূলতা, হজম ও বিপাক ক্রিয়ায় জটিলতা, যকৃত নষ্ট হওয়া ইত্যাদি চিনির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রচলিত স্বাস্থ্য সমস্যা। অতিরিক্ত চিনি শরীরের ‘ইনসুলিন’ ও ‘লেপ্টিন’ প্রতিরোধ করার ক্ষমতায় প্রভাব ফেলতে পারে।

আসলে অপরাধী চিনি নয়, অতিরিক্ত গ্রহণ করাই হল সব নষ্টের মূল।