আমাদের মনে কি কখনও এই প্রশ্নটা এসেছে আকাশ কেন নীল? কে আকাশে নীল রঙ মেখে দিয়ে আসলো? আকাশ কেন নীল এটা বুঝার আগে চলো আমরা একটা সহজ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করে ফেলি।
এই পরীক্ষার নাম, সাবান পানি ও সাদা আলোর পরীক্ষা। চলো শুরুতেই দেখে নেই আমাদের এ পরীক্ষা করতে কী কী লাগবে—
১। একটা কাঁচের লম্বা গ্লাস
২। পানি
৩। সামান্য সাদা সাবান, বা দুধ, বা সাদা রঙ
৪। সাদা LED লাইট
যেভাবে করব—
১। গ্লাসে পানির মধ্যে সামান্য সাবান, দুধ বা সাদা রঙ দিয়ে পানিটিকে হালকা কিন্তু স্বচ্ছ সাদা রঙ করে ফেলতে হবে। আমাদের পৃথিবীর ভূখণ্ডকে ঘিরে যে বায়ুমণ্ডল আছে সেই বায়ুমণ্ডলটাও এরকম, স্বচ্ছ-সাদা।
২। এবার ঘর অন্ধকার করে গ্লাসের মধ্যে দিয়ে সাদা LED লাইটের আলো পার করাতে হবে।
৩। এবার গ্লাসটা একটু নাড়াচাড়া করে ঠিক কোণে আনতে পারলেই দেখা যাবে গ্লাসের পানির রঙ আকাশী নীল হয়ে গিয়েছে।
কেন এই ঘটনা ঘটল?
এই ঘটনা কেন ঘটল এটা বোঝার আগে কিছু বিষয় জানা খুব জরুরী। যেমন, সাদা আলোতে কী থাকে। সাদা আলো বলে আসলে কোনো আলোই নেই। আলো আসলে সাতটা রঙের হয়। এগুলো হল বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। সত্যি কথা বলতে রঙ এই সাতটাও না। মৌলিক রঙ আসলে তিনটি। লাল, সবুজ ও নীল। বাকি রঙগুলো এই তিন রঙের কারণে তৈরি হয়। আর সবগুলো রঙ যখন মিশে যায় তখন আলোর রঙ হয় সাদা।
এই সাদা আলোই আমরা LED লাইট থেকে পেয়েছি। একই রকম সাদা আলো সূর্য থেকে পৃথিবীতে আসে।
বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে এই আলো যখন পৃথিবীতে প্রবেশ করে তখন সাদা অর্ধস্বচ্ছ বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে পার হওয়ার সময় নীল আলোটাই সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত হয়। ফলে ভূপৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে আমরা নীল রঙটাকে শুধু দেখতে পাই।
আমরা আমাদের এই পরীক্ষায় পানির মধ্যে যে সাদা রঙকে উপস্থিত করেছি তা পানিকে সাদা রঙের অর্ধস্বচ্ছ মাধ্যমে রূপান্তরিত করেছে, ঠিক যেমন বায়ুমণ্ডল। পার্থক্য হচ্ছে বায়ুমণ্ডলে ধূলার কণা থাকে যা সাদা আলোকে বিক্ষিপ্ত করে আর আমাদের দ্রবণে সাবান বা দুধের অণু বা সাদা রঙের অণু এই কাজটা করেছে।
এই সহজ বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটাই হল আকাশের নীল হওয়ার একমাত্র কারণ।