পরিশ্রমী শামুক

শামুক নামের প্রাণীটির সঙ্গে তোমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। চোখে যদি নাও দেখে থাকো তার নাম হরহামেশাই শুনে থাকবে। এই তো, যে কোনো কাজ করতে একটু দেরি করলেই মা বলে উঠেন, এমন শামুকের গতিতে আগালে হবে? শামুক প্রাণীটি জগত-বিখ্যাত তার শ্লথ গতির জন্য। অনেকে তাই একে কুঁড়েও ভাবে।

মাকসুদা আজীজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Oct 2015, 10:17 AM
Updated : 6 Oct 2016, 00:03 AM

আজ আমরা এমন একটা শামুকের কথা জানবো যেটি কুঁড়ে তো নয়ই বরং বেশ কাজের। সেই কাজের কাজটি কী জানো? এরা সমুদ্রে বসে রি-সাইক্লিং’এর কাজ করে। কীভাবে? সেটা তো জানবোই তার আগে চলো প্রাণীটি সম্পর্কে জানি।

প্রাণীটির নাম, নিউডিব্রোঙ্ক (nudibranch) এরা এক ধরণের সামুদ্রিক শামুক। বাস করে মূলত সমুদ্রের অগভীর জলে। তবে এদের মানুষ চিনে একটা অন্য কারণে। ওদের গায়ের রঙ খুবই আকর্ষণীয়। এ কারণেই মলাস্কা পর্বের অন্য প্রাণীদের থেকে এদের আলাদা করা যায়। শুধু যে গায়ের রঙ সুন্দর তা নয় এদের শরীরের আঁকিবুঁকি নকশাও খুব অভিনব। রঙ আর নকশার সৌন্দর্যের জন্য ওদের পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর প্রাণী বলে ডাকা হয়। ওদের রঙ আর নকশা নিয়ে আলোচনা বরং আমরা পরে করি আগে জেনে নেই ওদের বাকি বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী।

নিউডিব্রোংকের প্রায় তিন হাজার প্রজাতি পৃথিবীতে পাওয়া যায়। প্রজাতির সংখ্যায় এরা বিশাল হলে কী হবে, আকার কিন্তু এরা বেশ ছোট। সবচেয়ে বড়টি এক ফুটের মতো সবচেয়ে ছোটটি এক ইঞ্চির চার ভাগের একভাগ হতে পারে। ওজন হয় বড়জোর ৩ পাউন্ডের মতো। মাংসাশী এই প্রাণীর মুখে এক সারি বাঁকানো দাঁতও থাকে। শরীরে কর্ষিকা থাকে এবং শূককীট অবস্থার পরে দেহে খোলসের আবির্ভাবও হয়। নিউডিব্রোংকরা তাদের সেই বাঁকানো দাঁত দিয়ে স্পঞ্জ, কোরাল মাছের ডিম এইসব খেয়ে থাকে।

খাওয়া থেকে আমরা কী পাই? পুষ্টি পাই, শক্তি পাই। নিউডিব্রোংকরা আরও কী পায় জানো? খাদ্য থেকে ওরা নিজেদের শরীরের সব সুন্দর রঙ আর নকশাও পায় তাদের খাওয়া খাদ্য থেকে; মানে হলো ওরা যাদের খায় তাদের থেকে। সাগরের নিচে অনেক প্রাণীর দেখেই নানান রঞ্জক পদার্থ থাকে। এইসব রঞ্জক পদার্থ নিউডিব্রোংকরা নিজেদের দেহে নিয়ে যায়। এরপর সব রঙ মিলিয়ে মিশিয়ে একটা রঙ নকশা তৈরি করে নেয়।

এ তো গেলো এদের নিজেদের সাজানোর কথা। আরও জরুরী একটা কাজ এই সুন্দর শামুকটি করে থাকে। সমুদ্রের নিচে থাকা বিষাক্ত প্রাণীদের ওরা যখন খায় তখন সেই বিষও তারা নিজের দেহে ধারণ করে তারপর সেই বিষ ব্যবহার করে নিজের শিকারের কাজে। এভাবে সমুদের অনেক জঞ্জালও ওরা কমিয়ে রাখে। হুম,প্রাণীটি যেমন সুন্দর তেমনি কাজেরও!