সংগীতশিল্পীদের নতুন সংস্থা বিএলসিপিএস

গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের মেধাস্বত্ব রক্ষায় সক্রিয়ভাবে কাজ করবে লিরিসিস্টস, কম্পোজারস অ্যান্ড পারফর্মার্স সোসাইটি (বিএলসিপিএস)। এছাড়া সংগীতশিল্পীদের অর্থনৈতিক ও নৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণেও কাজ করবে  নতুন এই সংস্থাটি।

জয়ন্ত সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2014, 11:07 AM
Updated : 25 August 2014, 01:27 PM

গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পীদের অনুমতি না নিয়ে তাদের গানগুলো বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানি, এফএম রেডিও, টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করছে বলে অভিযোগ করেন শিল্পীরা। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই সংস্থাটির প্রধান উদ্দেশ্য হতে যাচ্ছে বলে জানানো হয়।

সংস্থাটির সভাপতি হিসেবে থাকছেন  সাবিনা ইয়াসমিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক হামিন আহমেদ। এছাড়াও থাকছেন আলাউদ্দিন আলী, শেখ সাদি, ফোয়াদ নাসের বাবু, মাকসুদ, আইয়ুব বাচ্চু, শুভ্র দেব, মনির খানের মতো শিল্পীরা। বিএলসিপিএস এর আইনি পরামর্শক হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ কপিরাইট অ্যান্ড আইপি ফোরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যারিস্টার এবিএম হামিদুল মিজবাহ।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সাবিনা ইয়াসমিন অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে সংগীতশিল্পীরা রেকর্ড কোম্পানি, টেলিফোন কোম্পানি, টিভি চ্যানেল, এফএম রেডিও ও ওয়েবসাইটে প্রচারিত তাদের গানগুলো থেকে সম্মানী পাচ্ছেন না। সংস্থাটি সংগীতশিল্পীদের আন্তর্জাতিক সংস্থা সিস্যাক- এর নির্ধারিত ফরম্যাট অনুযায়ী শিল্পীদের সম্মানী আদায়ে তৎপর হবে বলে জানান তিনি।

সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “সৃষ্টিশীল মানুষদের সৃষ্টিগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করছে। রীতিমতো ব্যবসা করছে তারা। এসব নিয়ে সব শিল্পীর পক্ষে প্রতিবাদ জানানোও সম্ভব নয়। শিল্পীরা নানাভাবে বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। সংস্থাটি পূর্ণমাত্রায় যাত্রা শুরু করলে শিল্পীরা দারিদ্র্য ও অসহায়ত্বের শিকার হবে না আর। আমরা তাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।”

সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিত মোস্তফা জানান, এখন থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংগীত ব্যবহারের অনুমোদন এবং সম্মানী প্রদানের জন্য এই প্রতিষ্ঠানের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সংস্থাটি শিল্পীদের প্রাপ্য টাকা সংগ্রহ এবং বিতরণের দায়িত্ব নেবে বলেও জানান তিনি।

সংস্থার আইনি পরামর্শক ব্যারিস্টার এবিএম হামিদুল মিজবাহ জানান, সংস্থাটির সদস্যরা মেধাস্বত্ব নিয়ে কোনো মামলা করতে চাইলে সংস্থাটি আইনি সহযোগিতা দেবে। 

সংস্থাটি ‘ওয়াইপো’ নামের একটি বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারিত গানগুলো পর্যবেক্ষণ করবে। প্রতিবার প্রচারের জন্য তারা মূল্য নির্ধারণ করে দেবে।

সুজিত মোস্তফা বলেন, “আমরা নবীন-প্রবীণ সব শিল্পীকে এক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে চাই। আমরা চাই, তাদের গানগুলো আমাদের সংস্থাতে নিবন্ধন করবে।  বিএলসিপিএস- এর নিবন্ধিত গানগুলো অনুমতি ব্যতিরেকে ব্যবহার রোধ , যথাযোগ্য সম্মানী পাওয়ার ব্যাপারে শিল্পীরা নিশ্চিত থাকতে পারে।”

সুরকার, গীতিকার ও শিল্পীদের মধ্যে কেউ যদি সংস্থাটির সদস্য না হয়ে তার শিল্পী স্বাধীনতার সুযোগ নিয়ে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে দেয় সেক্ষেত্রে সংস্থাটি হস্তক্ষেপ করবে না, “ শিল্পীদের ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে। কেউ যদি আমাদের সদস্য না হয়ে অন্যত্র গান বিক্রি করে দেয়, তবে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে বাকি দুজনও যেন বঞ্চিত না হন, সেক্ষেত্রে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখব।”

ছবি: তানভীর আহমেদ/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম