‘ঈদে সবচেয়ে বড় অ্যালবামটি হত আমার’

জেমসের ‘মা’,  হাসানের ‘এত কষ্ট কেন ভালোবাসায়’, খালিদের ‘কোনো কারণেই’ কিংবা আইয়ুব বাচ্চুর ‘বেলা শেষে’--  এই গানগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রিন্স মাহমুদের নাম। নব্বইয়ের দশকে ব্যান্ড মিক্সড অ্যালবাম বললেই এই নামটিই ভেসে উঠত শ্রোতাদের মনে। 

চিন্তামন তুষারচিন্তামন তুষারবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 July 2014, 09:32 AM
Updated : 10 July 2014, 09:32 AM

দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে সংগীতের সঙ্গে যুক্ত প্রিন্স মাহমুদ। ক্ষমা, ওরা এগারো জন, ঘৃণা, ব্যবধান, শেষ দেখা, এখনও দুচোখের বন্যা, দাগ থেকে যায়, স্রোত, দেয়াল দুই হৃদয়ের মাঝে, হারজিৎ, পিয়ানো, তাল, দহন শুধু তোমার জন্য ইত্যাদি অ্যালবামের সংগীত পরিচালনা করেছেন তিনি। পুরনো ও নতুন কাজ নিয়ে কথা বললেন গ্লিটজের সঙ্গে।

গ্লিটজ: একসময় ঈদে আপনার অ্যালবামের অপেক্ষায় থাকতেন শ্রোতারা। গত কয়েক বছর তেমন একটা আলোচনায় নেই আপনার কাজ। কারণটা কী?   

প্রিন্স: ১৮ বছরে প্রত্যেক ঈদেই আমার অ্যালবাম বেরিয়েছে। গত পাঁচ-সাত বছরে নতুনদের নিয়ে কাজ করছি বলে হয়ত তেমন প্রচার হয়নি বা আমিও তেমন যত্ন নিতে পারিনি।

গ্লিটজ:  ব্যান্ড মিক্সড অ্যালবাম বললেই প্রিন্স মাহমুদের নাম মনে পড়ে যায় শ্রোতাদের। ব্যান্ডসংগীতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছাটা কি শুরু থেকেই ছিল?  

প্রিন্স: সুর করা থেকেই আমার সংগীতজীবন শুরু। আর ব্যান্ড যেটা করেছি সেটা ঠিক ব্যান্ড বলা যায় না। আমার উদ্দেশ্যই ছিল সংগীত পরিচালক হওয়ার।  

গ্লিটজ:  স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ব্যান্ডসংগীতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আপনি। আপনার কথা ও সুরে শীর্ষ ব্যান্ড তারকারা জনপ্রিয় সব গান উপহার দিয়েছেন। তারপরও ব্যান্ডসংগীতকে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে গ্রহণ করলেন না কেন?

প্রিন্স: এটা আমার সৌভাগ্য যে বড় কোম্পানিগুলো ঈদ এলেই আমার অ্যালবাম বের করত এবং ঈদের সময়ে সবচেয়ে বড় অ্যালবামটি হত আমার। তবে যেমনটা আগে বললাম সংগীত পরিচালকই হতে চেয়েছি।

গ্লিটজ: গানও তো লিখেছেন...

প্রিন্স: আমি গান লিখতে পারতাম বলে মনে হয় না। কাজ শুরু করার পর লক্ষ করলাম গীতিকারদের সঙ্গে ‘কমিউনিকেট’ করতে পারছি না। তাদের ঠিকমতো সময় দিতে পারছি না। ঠিক তখনই গান লেখা শুরু করলাম।

গ্লিটজ:
শুরুর দিকে বেশ কয়েকটি অ্যালবামে গান গেয়েছেন আপনি। গান গাওয়া চালিয়ে গেলেন না কেন?

প্রিন্স: আমি যখন গান করেছি, তখন কোনো রকমের অতিরিক্ত কিছু ব্যবহার করিনি। একদম স্বাভাবিক রেখেছিলাম। এখন বুঝতে পারছি কী করে এই গানগুলোকে দাঁড় করানো যেত। মানে আমি গায়ক হিসেবে অনেক পপুলার হতে পারতাম। কিন্তু আমি তা কখনও করব না।

গ্লিটজ: বিভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহারে শিল্পীর কণ্ঠকে মসৃণ করে তোলাটা এখনকার চল। এ বিষয়ে আপনি কী মনে করেন? 

প্রিন্স: সময়কে বুঝতে হবে। একই সঙ্গে নিজস্বতাও ঠিক রাখতে হবে। তবে আমি এমন কিছু করছি না, যা কানে লাগে। দেখা যায় এক একটা বয়সের এক একটা লুক হয়। আমার পঁচিশ বছর বয়সে যে লুকটা ছিল। এখন হয়ত তা থাকবে না। এক এক সময়ের এক একটা গান হবে। আমার একুশ বছর বয়সে যে গানগুলো করেছি কিংবা ১৮ বছর বয়সে যে গানগুলো করেছি সেগুলো আমার কাছ থেকে এখন আশা করলে হবে না।

গ্লিটজ: একটা সময় কাজ করেছেন জেমস, হাসান, বাচ্চু, খালিদ, বিপ্লবদের সঙ্গে। এখন কাজ করছেন ন্যান্সি, পলাশ, এহসান রাহী, অরণ্যদের নিয়ে। কেমন লাগে?

প্রিন্স: আমি সবসময় নতুনদের নিয়ে কাজ করেছি। একদম নতুনদের সঙ্গেও কাজ করছি আজকাল। উপভোগ করছি সময়টা।

গ্লিটজ: একদম কম কাজ করেন আপনি। এর কারণটা কী বলবেন?

প্রিন্স: আমি জোর করে কিছু করতে যাই না। কোনো চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করতে পারি না। যখন ইচ্ছা হয় শুধু তখনই কাজ করি।

গ্লিটজ: সিনেমায় সংগীত পরিচালনা বিষয়ে আপনার ভাবনা কী? 

প্রিন্স:  কয়েকটি সিনেমার সংগীত পরিচালনার কাজ করেছি। ক্ষেত্রটিতে আরও কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে, তবে সেটা পরিচালক ও গল্প বুঝে।

গ্লিটজ: নতুন কোনো অ্যালবামে কাজ করছেন? 

প্রিন্স: এ বছর আমার কথা ও সুরে একটি অ্যালবামই প্রকাশ হবে হয়ত। অ্যালবামটির নাম ’২১-এ পা’। অ্যালবামের নাম ও গান ঠিক হয়েছে। শিল্পী চূড়ান্ত হয়নি এখনও। এবারের ঈদুলফিতরেই প্রকাশ হতে পারে অ্যালবামটি।