ঢাকায় ভারতের ‘যুদ্ধশিশু’

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ভারতীয় পরিচালক মৃত্যুঞ্জয় দেবব্রতের সিনেমা ‘চিলড্রেন অফ ওয়ার’ বাংলায় ‘যুদ্ধশিশু’ নামে মু্ক্তি পাচ্ছে ঢাকায়। ১৬ মে ঢাকা এবং ভারতের বিভিন্ন অংশে একইসঙ্গে মুক্তি দেওয়া হবে সিনেমাটি।

শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্স-এ আয়োজন করা সিনেমাটির উদ্বোধনী প্রদর্শনীর। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের কে. এম. শফিউল্লাহসহ আরও অনেকে।

সিনেমাটি বাংলোদেশে নিয়ে এসেছে খান ব্রাদার্স। তাদের পক্ষ থেকে সুদীপ্ত কুমার দাস জানান, ২০১৩ সালে সে সময়ের তথ্যমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশ এবং সহায়তায় এই সিনেমা তাদের পক্ষে বাংলাদেশে আনা সম্ভব হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “নারী নির্যাতনের বিষয়টিকে তুলে আনার মধ্য দিয়েই এই ছবির শুরু, সেই নারীকে দিয়েই ছবির শেষ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও যুদ্ধ করেছে। নারীরা সেই সময়ে পুরুষদের চেয়ে আরেকটা বাড়তি যুদ্ধ করেছিল; সেটা হল ইজ্জত রক্ষার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে তারা সম্ভ্রম হারিয়েছে। কিন্তু মাথা নত করেনি। তাদের উদ্দেশে উত্সর্গ করা এই ছবিটি আশা করি আমাদের চলমান সঠিক ইতিহাস উদ্ধারের অভিযানে সাহায্য করবে।”

কে এম শফিউল্লাহ সিনেমাটি সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, “৪৩ বছর আগে এই দেশে আসলেই কী ঘটেছিল, সেটা সম্পর্কে জানা যাবে এই ছবিটি দেখলে। আমার মনে হয়, সিনেমাটি যদি বাংলার গ্রামগঞ্জে মানুষকে দেখানো যায়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধের আসল ইতিহাস সবাই জানতে পারবে। বিশেষ করে ব্যারিস্টার রাজ্জাক যিনি জামায়াতে ইসলামী এবং রাজাকারদের হয়ে কথা বলেন, তার এই সিনেমা দেখা উচিৎ।”

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, “আমরা সকলেই জানি, যদ্ধ শেষ হয়নি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবার মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ এবং চেতনাকে খামচে ধরেছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির উত্থান ঘটেছে। আমরা যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করেছিলাম, তা এখনও শেষ হয়নি। আমার মনে হয়, এই ছবিটি দেখলে সেই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য নতুন প্রজন্ম প্রেরণা খুঁজে পাবে।”

মুম্বাইভিত্তিক প্রযোজনা সংস্থা পেনসিল এর এই সিনেমার গল্প আবর্তিত হয়েছে এক বীরাঙ্গনাকে ঘিরে যাকে ২৬ মার্চ রাতেই ধর্ষণ করে পাকিস্তানি সেনারা। তারপর তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে।

সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছেন রাইমা সেন, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, তিলোত্তমা সোম, পাভান মালহোত্রা, ভিক্টর ব্যানার্জি এবং ফারুখ শেখ।

২০১৩ সালের এই হিন্দি সিনেমার প্রাথমিক নাম ছিল ‘দ্য বাস্টার্ড চাইল্ড’। পরে ভারতের সেন্সরবোর্ডের নির্দেশে নাম পাল্টে সিনেমাটি মুক্তি পায় ‘চিলড্রেন অফ ওয়ার’ হিসেবে। সিনেমাটির বাংলা সংস্করণের নাম ‘যুদ্ধশিশু’।

“দর্শকের দেহে ভয়ের স্রোত বয়ে যাবে”