বলিউড বক্স-অফিসে ২০১৫ জুড়ে চলেছে ব্যবসার জোয়ার-ভাটা। খানদের মধ্যে বছরজুড়ে দাপট দেখাতে পেরেছেন কেবল সালমান। ওদিকে খালি মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেননি আকশায় কুমার। এছাড়াও বেশ কয়েকটি অল্প বাজেটের সিনেমা বাজিমাত করেছে কোনো বড় তারকা না থাকা সত্বেও।
Published : 31 Dec 2015, 04:43 PM
দেখে নেয়া যাক এ বছরের শীর্ষ বক্স-অফিস কাঁপানো সিনেমাগুলোর কথা।
১০। গাব্বার ইজ ব্যাক
এ বছর মুক্তি পাওয়া আকশায়ের দ্বিতীয় সিনেমা ছিল ‘গাব্বার ইজ ব্যাক’। তামিল, কানাড়া এবং তেলেগু—তিনটি ভাষায় রিমেইক হওয়ার পর হিন্দিতে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন তেলেগু পরিচালক কৃশ। বলা বাহুল্য, হিন্দি সিনেমার দর্শকদেরও মন জয় করেছে ‘গাব্বার ইজ ব্যাক’।
এতে আকশায়ের অভিনয়ের আলাদাভাবে প্রশংসা করেছেন সমালোচকরা। সিনেমাটি ভারতে আয় করেছে ৮৬ কোটি রুপি।
৯। সিং ইজ ব্লিং
সেরা দশে আবারও আকশায়ের উপস্থিতি, এবার তিনি এসেছেন অ্যাকশনের সঙ্গে কমেডি মিশিয়ে। প্রভু দেবার পরিচালনা এবং আকশায়ের অভিনয়, সিনেমা হিট হবার জন্য এই দুটি উপাদানই যেন যথেষ্ট।
‘সিং ইজ ব্লিং’ সমালোচকদের তেমন ভালো না লাগলেও আকশায়ের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ প্রারম্ভিক আয়ের সিনেমা ছিল এটা। ভেঙ্গেছে ‘ব্রাদার্স’-এর রেকর্ডকে। ভারতের ভেতরে সিনেমাটি আয় করেছে মোট ৯০ কোটি ২৫ লাখ
৮। ওয়েলকাম ব্যাক
‘ওয়েলকাম ব্যাক' নিয়ে ২০১৫ সালে ফিরেছেন অনিল কাপুর এবং নানা পাটেকর। ২০০৭ সালের হিট কমেডি 'ওয়েলকাম'- এর জাদু চলেছে বক্স অফিসেসমালোচকরা বলেছেন, ভালো চিত্রনাট্য এবং কলাকুশলীদের অভিনয়ই ছিল সিনেমার মূল আকর্ষণ।
এই পর্বে আরো যুক্ত হন জন আব্রাহাম, শ্রুতি হাসান, নাসিরুদ্দিন শাহ, ডিম্পল কাপাডিয়াসহ অনেকে। সিনেমাটির আয় ছিল ৯৪ কোটি ৮৭ লাখ রুপি।
৭। বেবি
‘বেবি’ ছিল এ বছর আকশায় অভিনীত প্রথম সিনেমা, যা দিয়ে দর্শক এবং সমালোচক দু পক্ষেরই প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। ভারতীয় গুপ্তচরের চরিত্রে আকশায়ের পারফরম্যান্স এবং নিরাজ পান্ডের পরিচালনা, দুটোই হয়েছে ব্যাপক সমাদৃত।স্পাই-থ্রিলার ‘বেবি’ আয় করেছে ৯৫ কোটি ৫০ লাখ রুপি।
৬। এবিসিডি টু
বছরের একমাত্র ড্যান্স ফিল্ম ‘এনিবডি ক্যান ড্যান্স টু’ বক্স-অফিসে দর্শকের মনকে নাচিয়েছে বেশ ভালোভাবেই। ‘এনিবডি ক্যান ড্যান্স’-এর সাফল্যের পর সিকুয়ালটি খুব যত্নের সঙ্গে নির্মাণ করেছেন নৃত্য নির্দেশক রেমো ডি সুজা।
‘এবিসিডি টু’তে নিজেদের নাচের প্রতিভা দেখানোর বিস্তর সুযোগ পেয়েছেন শ্রদ্ধা কাপুর এবং ভারুন ধাওয়ান। দর্শকের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন তারা। জুনে মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি আয় করে ১০৫ কোটি ৭৪ লাখ রুপি।
৫। বাজিরাও মাস্তানি
‘দিলওয়ালে’র সঙ্গে একই দিনে মুক্তি পায় পরিচালিত ‘বাজিরাও মাস্তানি’।ঐতিহাসিক প্রেমকাহিনিনির্ভর সিনেমাটি রোহিত শেঠির ‘দিলওয়ালে’র সামনে প্রথমে তেমন পাত্তা পায়নি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঞ্জয় লিলা বানসালির কুশলী পরিচালনার জাদু ছড়িয়ে পড়েছে দর্শকের ওপর। ভালো চিত্রনাট্য এবং অভিনয় দেখার আশায় যারা মুখিয়ে থাকেন, বলা হচ্ছে তাদের জন্য একদম সঠিক পছন্দ হতে পারে ‘বাজিরাও মাস্তানি’। ১৮ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া সিনেমাটি ৩০ ১২৬ কোটি ৫০ লাখ রুপি আয় করেছে।
৪। দিলওয়ালে
বছরের শেষে মুক্তি পেয়ে ইতোমধ্যেই সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে শাহরুখ খান এবং কাজল অভিনীত ‘দিলওয়ালে’। শত কোটির নির্মাতা রোহিত শেঠির পরিচালনা, তার ওপর ৫ বছর পর জনপ্রিয় জুটি কাজল-শাহরুখের পর্দায় ফেরা—‘দিলওয়ালে’ নিয়ে দর্শকের প্রতীক্ষা যেন সইছিল না।
১৮ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েই ভারত থেকে ২১ কোটি রুপি আয় করে ‘দিলওয়ালে’। ৩০ তারিখ পর্যন্ত ভারতের বাজারে সিনেমাটি সংগ্রহ করেছে ১২৭ কোটি রুপি। তবে হিসাবটা এখনও চলছে, কাজেই এখনই বলা যাচ্ছে যা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে ‘দিলওয়ালে’র আয়।
৩। তানু ওয়েডস মানু রিটার্নস
চলতি বছর বক্স-অফিসে সালমান খানকে টক্কর দিয়েছেন যে নায়িকা, তিনি হলেন কাঙ্গানা রানাওয়াত। নিজের অভিনয়গুণে আবারও দর্শককে টেনে প্রেক্ষাগৃহে নিয়েছেন তিনি। ‘তানু ওয়েডস মানু’র সাফল্যের পর আবারও তানুর চরিত্রে পর্দায় ফিরেছেন কাঙ্গানা, তবে এবার বিনোদন ছিল দ্বিগুণ।
তানুর মতো দেখতে দাত্তোর চরিত্রে কাঙ্গানার অভিনয় যেমন তাকে সমালোচকদের প্রশংসায় ভাসিয়েছে, তেমনই আনন্দ দিয়েছে দর্শককে। সিনেমাটি আয় করেছে ১৫২ কোটি রুপি।
২। প্রেম রাতান ধান পায়ো
এ বছরের ঈদ এবং দীপাবলী, ব্যবসা করার দুটো বড় সময়ই ছিল সালমানের দখলে। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে চলতে থাকা মামলার বিচার নিয়ে বছরটা কেটেছে দুশ্চিন্তার ভেতরে, কিন্তু এরপরও বক্স-অফিস থেকে সালমান খান একাই উঠিয়ে নিয়েছেন সিংহভাগ আয়। দীপাবলীর ছুটিতে সবচেয়ে বেশি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে সিনেমাটি মুক্তি দিয়ে শুধু ভারত থেকেই ২০৭ কোটি ৪০ লাখ রুপি ঘরে তুলেছেন সালমান।
‘প্রেম রাতান ধান পায়ো’তে সালমানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন সোনাম কাপুর। পারিবারিক ঘরানার সিনেমা নির্মাণের জন্য পরিচিত সুরাজ বারজাতিয়ার সিনেমায় সালমানের ফেরা নিয়ে চর্চা চলছিল এক বছর আগে থেকেই। সিনেমাটির বাজেট, শুটিং সেট, সালমানের চরিত্র—এসব নিয়েও আলোচনা কম হয়নি।
১। বাজরাঙ্গি ভাইজান
ঈদ-উল-ফিতরকে সামনে রেখে মুক্তি পায় ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’। ঈদের মৌসুমে যখন প্রেক্ষাগৃহে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকে বলিউডপ্রেমীরা, তখন ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ ছিল সালমান ভক্তদের জন্য সেরা উপহার। এমনকি পাকিস্তানেও বাজিমাত করেছে সালমানের এই সিনেমাটি।
‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’কে বছরের সেরা সিনেমা বলা চলে নিঃসন্দেহে। ভিন্ন ধারার গল্প নিয়ে নির্মিত এই সিনেমাটি দেখে সালমানের ভক্ত বনে যাবেন না এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া ভার। সমালোচকরা অনেকে তো বলেই দিয়েছেন, এটি সালমানের ক্যারিয়ারের সেরা সিনেমা।
সর্বকালের সেরা আয়কারী বলিউডি সিনেমার তালিকায় স্থান পাওয়া ‘বাজরাঙ্গি ভাইজান’ ভারত থেকে আয় করেছে ৩২০ কোটি ৩৪ লাখ রুপি। এরই মাধ্যমে শুধু দুটি সিনেমা মুক্তি দিয়ে ৫০০ কোটিরও বেশি আয় করে নিয়েছেন সুপারস্টার সালমান।