‘বড় পরিবর্তন ছাড়াই’ পাস হচ্ছে বাজেট

বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই পাস হচ্ছে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট, যাতে প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ ধরা হয়েছে।

আবদুর রহিম হারমাছিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 June 2015, 04:26 AM
Updated : 28 June 2015, 11:56 AM

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবারের বাজেট আলোচনার নজর মোটামুটি বাজেটের ওপরই সীমাবদ্ধ আছে।...কিছু কিছু বিষয়ে সমালোচনা হয়েছে; প্রশংসাও করেছেন অনেকে। কিছু সংযোজন-বিয়োজনেরও প্রস্তাব এসেছে।”

এ সব বিবেচনায় নিয়েই সোমবার অর্থবিল এবং মঙ্গলবার মূল বাজেট পাশ হবে বলে জানান মুহিত।

তিনি বলেন, “আমার এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না। চিনিসহ কয়েকটি পণ্যে শুল্ক বিষয়ে যে সংশোধন আনার সেটি আমি ইতোমধ্যে এনেছি। ছোটো-খাটো আর দু-একটি বিষয় ছাড়া তেমন কোনো পরিবর্তন আসবে না বাজেটে।”

১ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য গত ৪ জুন এই বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি জানান, জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা ইতোমধ্যে মতামত দিয়েছেন। রবি ও সোমবার আরও কয়েকজন বাজেটের উপর আলোচনা করবেন।

“সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেটের উপর আলোচনা করবেন। সবার আলোচনা বা মতামতের ভিত্তিতে বাজেটে কিছু সংযোজন-বিয়োজন আনা হতে পারে।”

অর্থবিল পাস হবে ২৯ জুন। অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবিত বাজেটের উপর বক্তব্য রাখবেন।

“তারপর আমি আমার বাজেটের উপর সমাপনী বক্তব্য দেব এবং অর্থবিল পাসের জন্য উত্থাপন করব,” বলেন মুহিত।

প্রথা অনুযায়ী, কোনো সংশোধনী আনতে হলে অর্থমন্ত্রীর সমাপনী বক্তব্য এবং অর্থবিল পাসের আগে প্রধানমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতার শেষে অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান।

এরপর অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধ আমলে নিয়ে সেসব বিষয়ে সংশোধনী আনার প্রস্তাব করেন।

টানা সাতটি বাজেট দেওয়া অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, সংসদের বাইরেও বিভিন্ন মহল থেকে আসা সুপারিশগুলো তিনি বিচার-বিশ্লেষণ করেছেন। তবে বড় কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন না।

“আমি এমন বাজেট দিয়েছি, যার বড় ধরনের কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হবে না; যেটার প্রয়োজন ছিল সেটা আমি ইতিমধ্যেই এনেছি।”

অর্থমন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, অর্থমন্ত্রী বাজেটে যে সব কর প্রস্তাব করেছেন তার প্রায় সবই থাকছে। পরিবর্তন আনা হতে পারে কেবল দু-একটি বিষয়ে।

এর মধ্যে, প্রস্তাবিত বাজেটে ন্যূনতম কর ৪ হাজার টাকা করার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল তা পরিবর্তন করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার জন্য ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা করা হতে পারে।

এছাড়া অন্য সিটি করপোরেশন এবং জেলা সদরের করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর ৪ হাজার টাকা এবং অন্যান্য এলাকার করদাতাদের জন্য এই কর ৩ হাজার টাকা করা হতে পারে।

বিদায়ী ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে সিটি করপোরেশন, জেলা সদরের পৌরসভা এবং অন্যান্য এলাকার জন্য ন্যূনতম কর যথাক্রমে ৩ হাজার, ২ হাজার এবং ১ হাজার টাকা ছিল।

প্রস্তাবিত বাজেটে তা সবার জন্য একই, ৪ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।

তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তাবিত বাজেটে পোশাক রপ্তানির উপর ১ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটার যে প্রস্তাব করা হয়েছিল তা কমিয়ে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

বিদায়ী বাজেটে তৈরি পোশাক রপ্তানি মূল্যের উপর শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ এবং অন্যান্য পণ্যে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ হারে উৎসে কর কেটে রাখা হত। প্রস্তাবিত বাজেটে তা সব ক্ষেত্রেই ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছিলেন অর্থমন্ত্রী।