প্রচলিত ও মার্চেন্ট ব্যাংকের আলাদা নিয়ন্ত্রকের পক্ষে মত

প্রচলিত ব্যাংক ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো আলাদা আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থার অধীনে এবং ভিন্ন ব্যবস্থায় পরিচালিত হওয়া উচিৎ বলে মত এসেছে এক আলোচনা সভায়।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2014, 09:08 PM
Updated : 17 Oct 2014, 10:32 PM

অবশ্য মার্চেন্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিরা মনে করেন, সব ধরনের নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে মার্চেন্ট ব্যাংক পরিচালনা করা উচিৎ।

শুক্রবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটউশনে আয়োজিত এক আলোচনায় এ মত উঠে আসে।  

বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ সমিতি আয়োজিত এ আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।

অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তা বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মো. রাজী হাসান বলেন, ২০০৯ সাল থেকে প্রচলিত ব্যাংকিং ও মার্চেন্ট ব্যাংকিং আলাদা করা হয়েছে। তারপর ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে যে সমস্যা হয়েছে সেক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রক সংস্থারও কিছু ‘দায়ভার’ রয়েছে।

তিনি বলেন, “এখন বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক যৌথভাবে পুঁজিবাজার ঠিক করার জন্য কাজ করছে। মার্চেন্ট ব্যাংক ও প্রচলিত ব্যাংক আলাদা হওয়াই উচিৎ।”  

বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমিশনার হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, “মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো ভুলভাবে কাজ করেছে। বিও অ্যাকাউন্ট স্বচ্ছতার সাথে হয়নি; যে কারণে আমরা অমনিবাস অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছি। আইপিও ম্যানেজমেন্টও ঠিকমতো হয়নি।”

তার মতে, শেয়ার বাজারের সংকটের মধ্যে পুঁজিবাজারে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ ছিল অনেক বেশি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসাবে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংক ‘ঠিকমতো’ কাজ করেনি।

“লোন মার্জিন লিমিট অনেকে মানেননি। অনেকে ১০ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করেছেন। অডিট ফার্মগুলো ভুল রিপোর্ট দিয়েছে। এসব কারণেই ২০১০ সালে বাজারে ধস হয়েছে।”

যমুনা ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের সিইও মোস্তফা বিল্লাহ বলেন, “আমরা কি করব বুঝতে পারি না। বাংলাদেশ ব্যাংক এক ধরনের নির্দেশনা দেয়, আবার একই বিষয়ে বিএসইসি আরেক ধরনের নির্দেশনা দেয়।”

নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সিইও মো. মনিরুজ্জামানও একই মত প্রকাশ করেন।

অর্থ প্রতিমন্ত্রী বলেন, “দেশের সব ক্ষেত্রে আস্থা ফিরেছে। মানুষের মধ্যে পরিবর্তন এসেছে। আমরা পরিবর্তনগুলোকে কাজে লাগাতে চাই।”

এজন্য তিনি সব পক্ষ থেকে সময়োপযোগী পরামর্শ চান।

আলোচনার মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সহ-সভাপতি জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা ঋণের জন্য ব্যাংকে যায়। ব্যাংক অর্থ ফেরত পাবে না এই ভয়ে তাদের পুঁজিবাজারে যেতে বলে। আবার এও বলে- তাদের শেয়ার ব্যাংক কিনবে। এসব বিষয়ে বিএসইসিকে সতর্ক হতে হবে।”

স্বার্থের সংঘাত যাতে না হয়, সেজন্য প্রচলিত ব্যাংক ও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে আলাদা ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণের সুপারিশ করেন তিনি।

যুব অর্থনীতিবিদ সমিতির সভাপতি বদরুল মনিরের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের নির্বাহী চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান জোয়ার্দার, আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম কামরুল আহসান ও সাবেক সভাপতি এ জেড এম সালেহ আলোচনায় অংশ নেন।