তোবা গ্রুপের বেতন জটিলতার প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে আপৎকালীন তহবিল গঠনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত পোশাক শিল্পের মালিকদের।
Published : 10 Aug 2014, 11:39 PM
তোবা গ্রুপের দেড় হাজার শ্রমিকদের জুলাই মাসের বেতন ও ওভারটাইম ভাতা দেয়ার পর রোববার বিজিএমএইএ নেতাদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্যে এই পরামর্শ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির মামলায় তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেন কারাগারে থাকার মধ্যে তার পাঁচ কারখানার শ্রমিকদের বেতন বকেয়া পড়লে আন্দোলনে নামে শ্রমিকরা, যাতে যুক্ত হয় বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন।
ঈদের আগের দিন থেকে তারা অনশন শুরু করলে ১২ দিন পর বিজিএমইএ অর্থ ধার করে শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন দেয়ার ব্যবস্থা করে। এর মধ্যেই নানা ঘটনায় অবসান ঘটে অনশনের।
এরই মধ্যে তোবার মালিক দেলোয়ার জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর শ্রমিকদের বাকি এক মাসের পাওনা ও ওভারটাইম ভাতা পরিশোধে রাজি হন। রোববার বিজিএমই ভবনে সেই অর্থ শ্রমিকদের হাতে তুলে দেয়া হয়।
তোফায়েল বলেন, “তোবা গ্রুপের সঙ্কট সমাধানে বিজিএমইএ যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। অনেকে অনেক সমালোচনা করছেন, আমি বলব- তৈরী পোশাক শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকার, মালিক ও শ্রমিকের সমন্বয়ের বিকল্প নেই।”
দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮১ শতাংশ তৈরি পোশাক থেকে আসার বিষয়টি তুলে ধরে এই খাতের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন,“ঈদের আগে দেশের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট দিয়েছিল যে ৭০০ কারখানায় বেতন নিয়ে সমস্যা হবে। আমরা চেষ্টা করেছি, কোনো কারখানায় যেন সমস্যা না হয়।
“একমাত্র তোবা ছাড়া কোথাও সমস্যাও হয়নি। তোবার মালিক জেলে থাকায় ও ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পাওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে, নতুবা তোবার সমস্যাও হত না।”
দেলোয়ার মুক্ত থাকলে এই সমস্যা হত না বলে বিজিএমইএ নেতারা শুরু থেকে বলে আসছিলেন। অন্যদিকে তোবার শ্রমিকদের অভিযোগ, দেলোয়ারের মুক্তি ত্বরান্বিত করতে তাদের বেতন নিয়ে এই জটিলতার সৃষ্টি করা হয়।
রোববার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা পর্যন্ত তোবা গ্রুপের ১২০০ শ্রমিক জুলাই মাসের বেতন ও ওভারটাইম ভাতা নেন বলে বিজিএমইএ সভাপতি সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান। রাত ১০টা পর্যন্ত বেতন দেয়ার ব্যবস্থা ছিল তোবার ১৪১৭ জন শ্রমিকের জন্য।
তোবা গ্রুপের কারখানাগুলো চালানোর বিষয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, “আপনারা জানেন তোবা গ্রুপের অনেক মেশিন, জমি বিক্রি করতে হয়েছে। এখন একটি প্রশ্ন উঠেছে, তোবা গ্রুপের কারখানাগুলো চলবে, না চলবে না।
“কারখানা চালু রাখা না রাখা মালিকের বিষয়। তবে আমরা বলব, সকলের সহযোগিতা পেলে কারখানা চলতে পারে।”
কারখানা বন্ধ হলে শ্রমিকরা কি আইন অনুযায়ী তাদের পাওনা পাবে- প্রশ্ন করা হলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “দেশে অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এখন অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স অনেক কারখানা বন্ধ করে দিচ্ছে। সেখানে বেতন দেয়া হচ্ছে। তোবার ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হলে আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য ব্যবস্থা থাকবে।”