বেসিক ব্যাংক ‘অর্থপাচারেও’

ঋণ বিতরণের অনিয়মের পাশাপাশি দেশ থেকে টাকা পাচারে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের বিরুদ্ধে।

শেখ আবদুল্লাহবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 June 2014, 01:04 PM
Updated : 3 June 2014, 01:04 PM

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এই তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখা পরিদর্শন করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, ব্যাংকটির ওই শাখা ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৩ সালের জুলাই মেয়াদে ১০টি কোম্পানির ২১টি রপ্তানি এলসির তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানায়নি।

“এমনকি এসব রপ্তানির মূল্য দেশে আনা (প্রত্যাবাসিত) হয়েছে কি না সে সংক্রান্ত কোনো তথ্য শাখার সংশ্লিষ্টরা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলকে দেখাতে পারেনি।”

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর বেসিক ব্যাংকের গুলশানসহ রাজধানীর তিনটি শাখার ঋণ বিতরণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১০টি কোম্পানি মোট ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৪৭ ডলারের রপ্তানি করেছে। কিন্তু এসব রপ্তানির বিপরীতে এলসি থাকলেও তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হয়নি। এছাড়া আরো একটি কোম্পানির ১ লাখ ৭ হাজার ৯৫৬ ডলারের রপ্তানি মূল্য নির্ধারিত সময় পার হলেও দেশে আসেনি। 

নিয়ম অনুযায়ী রপ্তানি পণ্য জাহাজে তোলার ১৪ দিনের মধ্যে এলসির অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হয়। এসব তথ্য না পাঠানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এছাড়া রপ্তানি পণ্য জাহাজে তোলার ১২০ দিনের মধ্যে তার মূল্য দেশে নিয়ে আসার নিয়ম রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রপ্তানি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত না করা একটি সন্দেহজনক কাজ। অসৎ উদ্দেশ্য থাকলেই ব্যাংকগুলো এসব তথ্য গোপন করে, যাতে রপ্তানি মূল্য দেশে আনা না হলে ব্যাংক কোনো জবাবদিহির মধ্যে না পড়ে।

“দেখার বিষয় হলো- কোন প্রতিষ্ঠানের রপ্তানি এলসির তথ্য গোপন করা হচ্ছে বা কোন প্রতিষ্ঠান রপ্তানি আয় মূল্য দেশে আনেনি। এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে ব্যাংকের পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক আছে কি না,” বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে বেসিক ব্যাংকের বক্তব্য নিতে টেলিফোন করা হলে ব্যাংকটির চলতি দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুস সোবহানের সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক এই শাখায় পরিদর্শন করে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়ম পেয়েছে। পরবর্তীতে আরো এক হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, যার তদন্ত চলছে।

এসব ঋণ অনিয়মের অভিযোগে ব্যাংকের গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক ও ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক শিফার আহমেদ ও শাখার ঋণ বিভাগের প্রধান জাহিদ হাসানকে গত ১৭ এপ্রিল বরখাস্ত করেছে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।