চট্টগ্রামে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গায় হবে ফ্ল্যাট-ডরমিটরি

চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে পরিত্যক্ত সরকারি বাড়ি ভেঙ্গে আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 April 2017, 11:19 AM
Updated : 4 April 2017, 12:00 PM

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ‘চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পে সায় দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পরে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া বিভিন্ন প্রকল্পগুলো সম্পর্কে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি নির্মাণ প্রকল্প প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, মূলত চট্টগ্রাম শহরের পাঁচলাইশ, নাসিরাবাদ, কাতালগঞ্জ, নিজাম রোড, জাকির হোসেন রোড ও সার্সন রোডের পরিত্যক্ত সরকারি বাড়িগুলোর জায়গায় এসব নতুন ভবন তৈরী করা হবে।

“এসব জায়গায় মোট ১৫টি ভবনে ৫১৯টি ফ্ল্যাট ও ৮০ কক্ষবিশিষ্ট একটি ডরমিটরি নির্মাণ করা হবে। এসব ভবন নির্মাণে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।”

চট্টগ্রাম শহরের সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সমস্যা প্রকট উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীন আবাসন পরিদপ্তর চাহিদা অনুযায়ী আবাসন সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। ফলে বাধ্যহয়ে অধিকাংশ সরকারি চাকরিজীবী নিম্নমানের ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছেন। এতে তাদের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার সম্মূখীন হতে হয়, যা তাদের কর্মদক্ষতা কমিয়ে দিচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, চট্টগ্রামের আবাসন প্রকল্পটিসহ একনেক সাত হাজার ৮৯০ কোটি টাকার মোট সাতটি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে।

এসব প্রকল্পে তিন হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে আর প্রায় চার হাজার ১৪ কোটি টাকা বৈদেশিক সহায়তা থেকে যোগান দেওয়া হবে।

একনেক বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ‘শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্প’। এর ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা।

‘দেশের বিভিন্ন জেলার জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ, ২য় পর্যায় প্রকল্প’। এতে ব্যয় হবে ৩০৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

‘আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলন, ২য় পর্যায় প্রকল্প’। এতে ব্যয় হবে এক হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা।

‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (৪র্থ পর্ব)’, যেখানে ব্যয় হবে ১১৫ কোটি ৮ লাখ টাকা।

এছাড়া ২১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারি ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙ্গন হতে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প’ এবং ৪৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ- রাজশাহী জোন প্রকল্পের’ অনুমোদন দেওয়া হয় একনেক বৈঠকে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে ‘রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমুহের আধুনিকায়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য বৈঠকে উপস্থাপন করা হলেও এটি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়ন না করে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয়। এর ফলে প্রকল্পটি প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রমে বাইরের প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত না করে নিজেরাই করব।

“দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অর্থায়ন ও কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে অন্য কাউকে অন্তর্ভুক্ত না করে আমরা নিজেরাই করব।”