ছয়টি উপজেলার পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাইকে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 13 Aug 2016, 11:17 AM
শনিবার গণভবনে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নিজের উপজেলা গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের বন্দর, নরসিংদীর পলাশ, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, কুমিল্লার আদর্শ সদর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটের শতভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে তিনি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয়ের দিকটি তুলে ধরে সবার উদ্দেশে বলেন, “আশা করি, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই একটু মিতব্যয়ী হবেন, সাশ্রয়ী হবেন। তাতে বিলও আপনাকে কম দিতে হবে।”
বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে কয়লা, নবায়নযোগ্যসহ বহুমুখী বিদ্যুৎ উৎপাদনে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথাও জানান সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও আমদানির আলোচনা চলছে।
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকারের লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ছয়টি উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেলেন।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে ৫৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়ার এই কাজ হয়েছে, যার গ্রাহক সংখ্যা ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০ জন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আশা করছেন, ২০১৮ সালের মধ্যেই ৯৫ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুতায়ন করতে পারবেন তারা।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নসরুল আশা করছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের মোট ৪৬৫ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়ে যাবে।
২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ চালিয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১৬-১৭ হাজার মেগাওয়াট ছাড়ানোর আশাও করছেন তিনি।
শনিবারের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে পণ্য খালাসের কাজ উদ্বোধন করেন।
এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী-কাঁচপুর পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রথম আট লেইনের সড়ক উদ্বোধন করেন তিনি।
একইসঙ্গে যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া এবং পাঁচ্চর-ভাঙ্গা মহাসড়ক উভয় দিকে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক পথসহ ৪ লেইনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের (পদ্মা সেতু লিংক রোড) নির্মাণ কাজও তিনি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, পদ্মা সেতুকে মাঝে রেখে যাত্রাবাড়ী থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত চার লেইনের যে সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু হলে সেটিই হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে।
চার লেইনের এ সড়কের দুই পাশ দিয়ে ধীরগতি যানবাহন চলার জন্য আরও দুটি ‘সার্ভিস লেইন’ থাকবে।
সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অনুষ্ঠানে এ কারণে সড়কটিকে আট লেইনের সড়ক হিসেবে অভিহিত করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামোর উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে শুরুতেই ‘হোঁচট’ খেলেও ‘অন্যায় দাবির কাছে মাথা নত’ না করে এই সেতুর নির্মাণ করে যাচ্ছে তার সরকার।
“বাংলাদেশ যে পারে, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি।”
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, “যে জাতির মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমার বাবা-মা জীবন দিয়েছেন, বাংলাদেশের মানুষের জীবন-মান উন্নয়নের লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।”
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশের দুই হাজারের বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন’-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।